স্টাফ রিপোর্টার :-১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নদীপথ ছিল আমাদের সহজ ও নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম। যুদ্ধের রণকৌশলে অন্যতম ভূমিকা, অসংখ্য যুদ্ধ, মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল, প্রশিক্ষণ,যোগাযোগ এর অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদীগুলো।
মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নিজেদের নদীপথকে খুব ভালোভাবে চিনতেন, জানতেন বলেই নদীর পানিতে নাক ভাসিয়ে, অস্ত্র উঁচিয়ে যুদ্ধ করেছেন।
দেশের সকল নদী হয়ে উঠেছিল তখন মানুষের বিশ্বস্থ ঠিকানা। কিন্তু সেই ঠিকানা আজ অস্থিত্ব হারাতে বসেছে।
নদীর স্বাভাবিক চলাচলে এখন স্বাধীনতা নেই, বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমাদের অধিকাংশ নদ-নদী হারিয়ে গেছে!
দখল, দূষণ এবং নদীর উপর অত্যাচার-অনাচার ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দখল – দূষণের কবল থেকে নদী রক্ষার দাবিতে একথা বলেন বাপার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ‘নদীর স্বাধীনতা চাই‘ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
হবিগঞ্জের খোয়াই নদীতে বেলা ১১টা থেকে এক ঘণ্টাব্যাপী নদীতে অবস্থানকালে বাপা হবিগঞ্জের
সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল এর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন নদীপাড়ের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ, লিটন গোপ, তারুণ্য সোসাইটির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম,
মাঝি মোঃ রনি মিয়া, মোঃ শাহিন মিয়া, নাসির হোসেন তানভির, মোঃ জুয়েল মিয়া, সাইদুল ইসলাম, ইফতখার হোসেন রাহাত, জাবেদ আহমেদ প্রমুখ।
তোফাজ্জল সোহেল বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীগুলো আজ নানামুখী অত্যাচারে চরম বিপর্যয়ের শিকার। নদী নিয়ে ব্যবসা করা, নদী দখল ও হত্যা করে তা থেকে আর্থিক ফায়দা লুটা, নদীর উপর বাড়ি-ঘর, স্থাপনা নির্মাণ, নদীকে দূষণ করা ইত্যাদি সকল অন্যায় ও অবৈধ আয়োজনই নদীর জন্য করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের খোয়াাই, পুরাতন খোয়াাই নদী দখল-দূষণ, সোনাই নদীর উপর স্থাপনা, শিল্পের নামে সুতাং নদীর বুকে কলকারখানার বিষাক্তবর্জ্য নিক্ষেপ করা, খোয়াই, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদী থেকে
যথেচ্ছভাবে বালু -মাটি উত্তোলন এর কারণে এই অঞ্চলের নদনদী, প্রাণ প্রকৃতির চরম সংকটজনক অবস্থায় পতিত হয়েছে।
আর উত্থান ঘটছে অবৈধ সুবিধাভুগি এক শ্রেণি মানুষের! নদীগুলোকে এইসব অন্যায়-
অপরাধ থেকে রক্ষা করার কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না! উচ্চ আদালত ঘোষিত জীবন্তসত্ত্বা নদীর উপর যারা অন্যায় করছে তারা এই সময়ের রাজাকার।
তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জে গড়ে উঠা কলকারখানাগুলো পরিবেশ সংরক্ষণ আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনসমূহ অমান্য করে বেপরোয়া রাসায়নিক দূষণ চালিয়ে আসছে যা সংশ্লিষ্ট গ্রামসমূহের বাসিন্দাদের সাংবিধানিক অধিকারের উপর সরাসরি আঘাত।
দীর্ঘদিনের দূষণে ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক
বিপর্যয়ের পাশাপাশি উদ্বেগজনক মানবিক সংকটের সৃষ্টি করেছে।
খোয়াই নদী ও পুরাতন খোয়াই নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে অত্যন্ত সঙ্কটজনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি লক্ষ্য রেখে এখনই দখল ও দূষণ প্রক্রিয়া রোধসহ দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে খোয়াই, সুতাংসহ অন্যান্য নদী-জলাশয়ের সুস্থ্য স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয় এই কর্মসূচি থেকে।
Leave a Reply