শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বাহুবলে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ যুবক গুরুতর আহত ॥ সিলেট প্রেরণ চাকুরীতে কোটা বাতিলের দাবিতে শায়েস্তাগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাড়াশি অভিযান ॥ বিপুল পরিমান মাদক ও চোরাই টমটমসহ গ্রেফতার ৫ বাহুবলে রাস্তার পাশ থেকে এক নবজাতক উদ্ধার আজমিরীগঞ্জে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের আয়া মায়া রাণীর অপচিকিৎসায় প্রসূতি মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ লাখাই-হবিগঞ্জ সড়কের ব্রিজের নীচ থেকে বৃদ্ধের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার নবীগঞ্জে ৩টি ওয়ারেন্টে মামলার ৬ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী এস এম আলী গ্রেফতার চুনারুঘাটে ডিবি’র পৃথক অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ॥ ৪৫ কেজি গাঁজাসহ প্রাইভেটকার ও সিএনজি গাড়ী আটক হবিগঞ্জের আলোচিত সানজানা শিরিনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান। সুতাং ব্রীজে পিকআপ ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ ॥ মহিলা নিহত

৩ উইকেটের অপেক্ষা মাশরাফির

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৯
  • ৩৬৩ বার পঠিত

স্পোর্টস ডেস্কঃ আর মাত্র ৩ উইকেট, তাহলেই মাশরাফি বিন মুর্তজা ছুঁয়ে ফেলবেন সেই রেকর্ড। যে রেকর্ড তাঁকে নিয়ে যাবে গ্রেট ক্রিকেটারদের এক বিশেষ দলে।
গ্যালারি উপচানো দর্শক নেই, তাঁবু টানিয়ে বানানো খোলা প্রেসবক্স। এই দুইয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, মাঠে খেলোয়াড়েরা কখন কী বলছেন, স্পষ্ট শোনা যায়। স্টাম্প মাইক্রোফোনের সুবাদে খেলোয়াড়দের কথাবার্তা শোনা নতুন অভিজ্ঞতা নয় অবশ্যই। কিন্তু এখানে পুরো মাঠে কেউ একটু গলা চড়ালেই পাশের সাগরের কনকনে বাতাস ডাকপিয়নের মতো তা বয়ে আনছে প্রেসবক্সেও। মাশরাফি বিন মুর্তজা যে অনুজদের মাঠে কতটা শাসনে রাখেন, এই সফরে তা স্পষ্ট বোঝা গেল। শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে!

কাল মাশরাফির ধমক বেশ কয়েকবার হজম করতে হলো মেহেদী মিরাজকে। এমনিতে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে মিরাজই মাঠে সবচেয়ে তৎপর। সব সময়ই বকবক করে চলেছেন। অনুশীলন ম্যাচে তো আম্পায়াররা একের পর এক বাজে সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন বলে বেশ কয়েকবার টিপ্পনীও কেটেছেন। বাংলা ভাষাটা আম্পায়ারদের জানা ছিল না বলে রক্ষা। মাশরাফিও কাল খাস বাংলায় মিরাজকে বকে দিলেন। এর মধ্যে মিরাজ পয়েন্টে সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। ভালো ফিল্ডার বলেই তো পয়েন্টে গেছ বাপু, ক্যাচ ফেলা কেন তবে!

মিরাজ ক্যাচটা না ফেললে কাল হয়তো ওয়াকার ইউনুসকে পেছনেই ফেলে দিতেন মাশরাফি। রেকর্ডটা তখন চলে আসত আরও নিশ্বাসদূরত্বে। ২ ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়া মাশরাফি কীর্তিমানদের সেই তালিকায় এই সিরিজেই ঢুকে পড়বেন বলে মনে হচ্ছে। কোন কীর্তি? অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে শততম উইকেটের মাইলফলকে পা রাখা। অধিনায়ক মাশরাফির উইকেট এখন ৯৭। এক শর বেশি উইকেট আছে মাত্র তিন অধিনায়কের।

এই ত্রিমূর্তি নিজ নিজ নামে ভাস্বর। ১০৯ ম্যাচে ১৫৮ উইকেট ওয়াসিম আকরামের। নেতৃত্ব দেওয়া ৯৭ ম্যাচে শন পোলক নিয়েছিলেন ১৩৪ উইকেট। পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান ১৩৯ ম্যাচে ১৩১ উইকেট। মাশরাফির ৯৭ উইকেট ৭৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে। এর মধ্যে অধিনায়ক পোলক ১০০ উইকেটের মাইলফলক পেরিয়েছিলেন ৭৪তম ম্যাচে। ৯৬ ম্যাচ লেগেছিল কিংবদন্তি অধিনায়ক ইমরানের। ৬১ ম্যাচ ওয়াসিম আকরামের। মাশরাফি তো সমানেই টেক্কা দিচ্ছেন এই বুড়ো বয়সেও!
তাঁর নেতৃত্বগুণ এরই মধ্যে ক্রিকেট-বিশ্বে আলাদা আলোচনার বিষয়। জন্টি রোডস নাকি শুধু ফিল্ডিং দিয়ে দলে জায়গা করে নিতে পারতেন, মাশরাফির বেলায় যেটি অধিনায়কত্ব দিয়ে বলা যায়। বিপিএলে কুমিল্লাকে যেবার জেতালেন, সেবার মূলত অধিনায়কের ভূমিকাটাই তো ছিল। তাই বলে ‘সাংসদ’ মাশরাফি ‘অধিনায়ক কোটা’য় খেলেন বলে তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শবিরোধীরা যে হাওয়াটা তোলেন, তা কতটা অগ্রহণযোগ্য, সেটি পরিসংখ্যানই বলবে। গতি, সুইং আগের মতো নেই—এ তো বাস্তবতা। কিন্তু ৩৫ বছর বয়স আর হাঁটুর সাত অস্ত্রোপচার সঙ্গে নিয়েও নিবেদনে এতটুকু ঘাটতি কেউ খুঁজে বের করতে পারবে না মাশরাফির।
গত তিন বছরে বাংলাদেশ দলের সেরা বোলারের নাম মাশরাফি বিন মুর্তজাই। ৪৭ ম্যাচে ৬১ উইকেট। ৩৬ ম্যাচে ৫৭ উইকেট নিয়ে দুইয়ে মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের ম্যাচসংখ্যা ইঙ্গিত করে, দলের মূল বোলাররা কেউই মাশরাফির সমান ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তবে তাতেও নিন্দুকেরা কোনো তির খুঁজে পাবে না তাক করার জন্য। দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক খেলোয়াড় সাকিবের ৪০ ম্যাচে ৪৩ উইকেট এই তিন বছরে। সাকিবের চেয়ে ৭ ম্যাচ বেশি খেলে মাশরাফি ১৮ উইকেট বেশি নিয়েছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি সমালোচনা—স্লগ ওভারে রানের চাপ নেন না। সাদাচোখে দেখলে তা মনেও হতে পারে। কিন্তু কালকের ম্যাচেই যেমন শেষ ১০ ওভারের চারটিই নিজের জন্য তুলে রেখেছিলেন। শেষ ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে মহামূল্য ২ উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওস্তাদের মার শেষ ওভারেও হতে পারে বৈকি। সত্যি বলতে, এই সিরিজে দুই ম্যাচেই যে বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে ভেলকি দেখাল, তা মাশরাফির সৌজন্যেই।
মাশরাফির ভক্ত না হয়ে বেশি দিন টিকে থাকা খুব কঠিন। ইনিংস বিরতি শেষে সাজঘরে ফেরার সময় যেমন সবচেয়ে খুনসুটি করলেন মিরাজের সঙ্গেই। ভাই বকে দিয়েছে বলে যে একটু অভিমান করবেন মিরাজ, সেই সুযোগই নেই। স্নেহের ডাস্টার মুছে দিল অভিমানের খড়িদাগ!
সুত্রঃ প্রথম আলো

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com