ছনি চৌধুরী, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নদী সচল ও প্রবাহমান রাখতে নবীগঞ্জ শাখা বরাক নদীর ‘অবৈধ দখল’ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে হবিগঞ্জের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং ও নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন এর যৌথ নেতৃত্বে ‘হাট নবীগঞ্জ’ মৌজার চরগাঁও ব্রিজ হতে এ অভিযান শুরু হয়। এ সময় নদীর উপর কিছু জায়গা দখল করে নির্মিত আব্দুর রহমানের ৫ তলা, অসিত পালের ৩ তলা বিল্ডিংয়ের পিছনের কিছু অংশ, সিএনজি স্ট্যান্ড, পৌরসভার সবজি বাজারের ৬টি পাকা ঘরসহ বেশ কয়েকটি বিল্ডিং এর দখলকৃত অংশ ভেঙে দখলমুক্ত করা হয়। এছাড়া অনেক দখলদার অভিযান শুরু পরপরই স্বেচ্ছায় নিজেদের দখলকৃত অংশ ভাঙতে শুরু করেন। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী এম এল সৈকতসহ আরো অনেকেই। নবীগঞ্জ থানার এসআই সামশুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযানে সহযোগিতা করেন।
এব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও শাখা বরাক নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আমরা আশান্বিত। আমরা মনে করি সকল ধরণের অবৈধ স্থাপনা নির্মোহভাবে সীমানা নির্ধারণের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে। সাথে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনের দাবী জানাচ্ছি। আমরা মনে করি শাখা বরাক নদীটি উচ্ছেদের মাধ্যমে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষাসহ নদীটিকে সাবেক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।
অভিযান প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন জানান, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন মৌজার ১০১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যেসব জায়গায় সমস্যা ছিল, সব মামলা নিষ্পত্তি করেই উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান- উচ্ছেদ শেষে শীঘ্রই শাখা বরাক নদীর খননের কাজ শুরু হবে। এর জন্য ইতিমধ্যে বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। নদীর উপর অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের পর খনন করা হলে নদী ফিরে পাবে তার হারানো যৌবন।
শেয়ার করুন
Leave a Reply