স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেটাররা ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় লিগের ম্যাচ ফি বাড়ানো, বিপিএলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি, আনুসাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’ সিস্টেম বাদ দিয়ে আগের মতো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের উন্মুক্ত দল-বদলের দাবিসহ মোট ১১ দফা দাবিতে সোচ্চার ক্রিকেটাররা আজ দুপুরে মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে একাডেমি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে ওই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। টেস্ট এবং টি টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বিসিবিকে দেয়া হয়েছে আল্টিমেটাম।
এই ১১ দফা দাবি মানা না হলে তারা ধর্মঘটে যাবেন। জাতীয় লিগে অংশ না নেয়া থেকে শুরু করে ভারত সফরের প্রস্তুতি ক্যাম্প না করা এবং ভারত সফরে না যাওয়াসহ সব রকমের ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার ঘোষণাও এসেছে। সাকিব আল হাসান একা নন। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ মাশরাফি বিন মর্তুজা ছাড়া প্রায় সব প্রতিষ্ঠিত তারকা ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররাই উপস্থিত ছিলেন সোমবার দুপুরের এই সংবাদ সম্মেলনে।
ক্রিকেটারদের হঠাৎ এই অবস্থান দেখে ভক্ত ও সমর্থকরা বিস্মিত, হতবাক! সবার একটাই প্রশ্ন, হঠাৎ কী এমন হলো যে সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, তামিমসহ প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটাররা এমন বেঁকে বসলেন? এমন অসন্তোষ আর ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়াই বা কেন?
বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন, বিসিবি পরিচালক এবং মূলত জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পরিচালনা, পরিচর্যা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান আকরাম খান এবং বিসিবির নীতি নির্ধারক মহলের অন্যতম সদস্য মিডিয়া কমিটি প্রধান জালাল ইউনুস এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেটারদের এসব দাবি দাওয়ার কথা জানা ছিল না। ক্রিকেটাররা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দাবি দাওয়া পেশ করেনি।
তারপরও বিসিবি সিইও তাৎক্ষণিকভাবে শেরে বাংলার একাডেমি ভবনের সামনে দাড়িয়ে বিকালেই আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে ক্রিকেটারদের দাবির কথা জেনেছি। চেষ্টা থাকবে দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করার। জালাল আর আকরাম খানও প্রায় একই সুরে কথা বলেছিলেন।
জালাল পুরো ঘটনাকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বিস্মিত, হতবাক। ক্রিকেটাররা যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছে, তা এমন কিছু নয় যে সমাধান করা যাবে না বা সমাধান নেই। সেগুলো অতি অবশ্যই সমাধানযোগ্য। এসব দাবি নিয়ে বোর্ডের সাথে আন্তরিকতাপূর্ণ সংলাপ হতেই পারতো। আলোচনায় বসে এসব দাবি উত্থাপন করলে নিশ্চয়ই সমাধানের পথ বেরিয়ে যেত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোর্ডের কাছে লিখিতভাবে কোন দাবি আকারে পেশ করলেও তা নিয়ে অবশ্যই কথা হতো। কিন্তু তা না করে সরাসরি আল্টিমেটাম দেয়া। তাও আজ ঘোষণা দিয়ে কাল থেকেই আল্টিমেটাম- এটা কেমন হয়ে গেল না? কেউ কেউ এতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন। আমরা শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তি নেয়ার চিন্তা করছি কি না? এমন প্রশ্নও করেছেন কেউ কেউ? না না। আমরা অমন ভাবছি না। আমরাও চাই বিষয়টির মীমাংসা হোক। এজন্যই মঙ্গলবার বোর্ডে বসবো আমরা। একটা অনানুষ্ঠানিক সভাও হবে। সেখানেই হয়ত বসে সব কিছু ঠিক হবে।’
জালালের শেষ কথা, ‘এটা ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা এবং আমরা খুটিয়ে দেখছি কেউ বা কোন মহল ক্রিকেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাচ্ছে কি-না?’
Leave a Reply