শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন

বাঁচানো গেল না নুসরাতকে

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯
  • ২৯৭ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্কঃ  ফেনীর দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে বাঁচানো গেল না। বাঁচার আকুতি জানিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে যাওয়া এই ছাত্রী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নুসরাত ঢামেক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটির ফুসফুসকে সক্রিয় করতে গতকাল মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসেনি।

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরি দেয় দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার হাতে যৌন হয়রানির পর সহপাঠী দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে আবেগঘন চিঠি লিখে রেখে গেছেন নুসরাত জাহান রাফি। সেই লেখা চিঠি তার খাতা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এতে রাফি লিখেছেন, ‘আমি লড়বো, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত।’ ওই সূত্র জানায়, তার পড়ার টেবিলে খাতায় দুই পাতার ওই চিঠিতে তামান্না ও সাথী নামের দুই বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে এই চিঠি লেখা হয়।

নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, চার দুর্বৃত্ত বোরকা পরে এসে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বোরকা পরা চারজনের মধ্যে একজনের নাম শম্পা। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, গত শনিবার নুসরাতকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন আমি তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। তাকে জিজ্ঞেস করি কেমন আছ? তখন, নুসরাত বলে, ‘স্যার আমাকে বাঁচান, আমি বাঁচতে চাই।’

ঘটনার দিন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সেই দিন নুসরাত জাহান আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যান। পরে তিনি প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে যায়। সেখানে থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার অনুগত কয়েক দুর্বৃত্ত ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার আত্মচিৎকারে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে।

সৌজন্যেঃ ইত্তেফাক

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com