প্রথম সেবা ডেস্কঃ দেশব্যাপী নতুন করদাতা বাড়াতে রাজধানী ঢাকাসহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অগ্রসরমান এলাকাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া গ্রামাঞ্চলেও যাওয়া শুরু করেছেন কর কর্মকর্তারা। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নতুন করে সাত লাখ ব্যক্তিকে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে কর বিভাগ। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে নতুন ২ লাখ করদাতার সন্ধান পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, করদাতা খুঁজতে সেকেন্ডারি সোর্সকে কাজে লাগাচ্ছে এনবিআর। এর অংশ হিসেবে বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ), বিদ্যুত্ ও গ্যাস বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ, ভুমি নিবন্ধন অফিসসহ এ ধরণের অন্যান্য সূত্র থেকে তথ্য নিচ্ছে কর বিভাগ। জানা গেছে, এ প্রক্রিয়ায় গত দুই বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিকে করের আওতায় আনতে পেরেছে। এ প্রক্রিয়াকে আরো জোরদার করতে সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। সিটি কর্পোরেশনের কাছে থাকা তথ্য ভান্ডার পরীক্ষা করে নতুন করদাতা চিহ্নিত করতে চায় এনবিআর। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা হয়েছে এনবিআর কর্মকর্তাদের।
এনবিআরের একজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের কারনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কার্যকরভাবে জরিপ কাজে পাঠানো যাচ্ছে না। কেননা মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে লোকবল সংকট রয়েছে। তবে সেকেন্ডারি সোর্স ব্যবহার করে নতুন করদাতা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বড় সফলতা পাওয়া যাচ্ছে। যেমন বিআরটিএ’র কাছে সব গাড়ির মালিকের তথ্য রয়েছে। আমরা সেখান থেকে তথ্য নিয়ে যাচাই-বাছাই করতে পারছি। নতুন করে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আশা করছি সিটি কর্পোরেশনের কাছে থাকা তথ্য ব্যবহার করে করযোগ্য অনেককেই করের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
সূত্র জানিয়েছে, এর বাইরে কোম্পানি করদাতাদের করফাঁকি ধরতে আকস্মিক অডিট কার্যক্রমও শুরু করেছে কর বিভাগ। গত মাস থেকে এ কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের উেস কর ফাঁকি ধরা সম্ভব হয়েছে।
এনবিআরের হিসাবে, বর্তমানে দেশে কর সনাক্তকরণ নম্বরধারীর (ই-টিআইএন) সংখ্যা ৩৬ লাখের কিছু বেশি। এর মধ্যে গত তিন বছরেই নতুন করে করের খাতায় নাম লিখিয়েছেন ১৫ লাখের উপরে। এর মধ্যে বেশিরভাগই চাকরিজীবী। করযোগ্যদের করের আওতায় আনতে গত তিন বছরে সরকার বাজেটে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে টিআইএনধারী বেড়েছে। তবে সরকার মনে করছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে কর দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে অন্তত এক কোটি মানুষের। যদিও এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোন পরিসংখ্যান কিংবা গবেষণা নেই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন এইডের হিসাবে, দেশে বর্তমানে কর দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন প্রায় ৬০ লাখ মানুষ।
সৌজন্যেঃ ইত্তেফাক
Leave a Reply