বিজ্ঞানীরা বিষয়টিতে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। আরো গবেষণার মাধ্যমে এ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল মানুষের ক্ষেত্রে বয়স জনিত রোগ নিরাময়ে কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করছেন।
বড় এই সাদা হাঙ্গর নিজে থেকেই নিজের ডিএনএ মেরামত করার ক্ষমতা রাখে, যেমনটি আমাদের নেই।
‘সেভ আওয়ার সীজ শার্ক রিসার্চ সেন্টারে’র ব্যানারেএই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ফ্লোরিডার নোভা সাউথ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী।মানুষের কিছু ‘পরিবর্তনশীল জিন’ আমাদের বয়স জনিত রোগ ও ক্যান্সারের প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
হাঙ্গরের ক্ষেত্রে দেখা গেছে তারা দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে হারিয়ে শীর্ষে অবস্থান করে আসছে। আর সে জন্যেই তাদের মধ্যে নিজেদের জিনকে মেরামত এবং বিভিন্ন ক্ষতি কাটিয়ে সহনশীল হবার বিকাশ ঘটেছে।
গবেষণাটির সহ-নেতা ড. মাহমুদ শিভজি বলেন, ‘জিনোম-এর অস্থিতিশীলতা বা পরিবর্তনশীলতা মানুষের বহু গুরুতর রোগের জন্যে দায়ী। আমরা এখন দেখতে পারছি, এসব বৃহদাকার ও দীর্ঘজীবী হাঙ্গরগুলোর ক্ষেত্রে প্রকৃতি জিনোম-এর স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সুচতুর কৌশল বিকাশ করেছে।’
তার মতে, বিবর্তনের এইসব বিস্ময়কর বিষয় থেকে শেখার আছে প্রচুর। এসব তথ্য থেকে ক্যানসার এবং অধিক বয়সের বিভিন্ন রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে তা যেমন জানা যাবে, তেমনি ক্ষত নিরাময়ের কৌশলও পাওয়া যাবে- যা প্রাণি জগতে অনেকেই করে আসছে।
প্রায় ১৬ মিলিয়ন বছর ধরে সাগরে বিচরণ করছে এই গ্রেট হোয়াইট শার্ক। এদের সবচেয়ে বড় প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে হয় ২০ ফিট এবং ওজন হয় ৩ টন। হাঙ্গরের ডিএনএ মানুষের চেয়ে অন্তত দেড় গুণ বড় হয়ে থাকে।
আর বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন ডিএনএ-তে সংরক্ষিত সেইসব তথ্য বা কোড-এর অর্থ বের করতে। যার মাধ্যমে হাঙ্গর তার সমস্যার সমাধান কিভাবে করছে সেই রহস্য কাজে লাগানো যাবে।
হাঙ্গর সাধারণত গুরুতর আহত অবস্থা থেকে নিজেদের দ্রুত নিরাময় করে তুলতে পারে। সুতরাং গবেষকরা মনে করছেন যে, কাঙ্ক্ষিত তথ্য তাদের ক্ষত নিরাময় ও রক্ত জমাট বাধার সমস্যার সমাধানও দেবে।
প্রকৃতির অন্যতম ভয়ঙ্কর এই প্রাণীটিকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরবে এই গবেষণা।
সাগরে যারা তাদের তুলনায় দুর্বল- এমন মাছ ও অন্যান্য প্রাণী শিকার অব্যাহত রাখার মাধ্যমে নিজেদের শিকার দক্ষতাকে বৃদ্ধি করে হাঙ্গর। গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও হাঙ্গর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে। কেননা তারা সেইসব ছোট ছোট প্রাণী শিকার করে থাকে যারা অধিক পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন করছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
Leave a Reply