প্রথম সেবা ডেস্কঃ ‘সোনালী কাবিন’-এর কবি আল মাহমুদ আর নেই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার রাতে ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন)। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। আল মাহমুদ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে কবির ব্যক্তিগত সহকারী আবিদ আজম জানিয়েছেন।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত শনিবার সন্ধ্যার পর এই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল আল মাহমুদকে। প্রথমে সিসিইউ ও পরে আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
শুক্রবার রাত ১০ দিকে আল মাহমুদকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় বলে জানান আবিদ ।
১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আল মাহমুদ। তার প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দমন-নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে পঞ্চাশের দশকে এসে বাংলা কবিতার বাঁক বদল ঘটে। কবিতায় এ সময় রাজনীতি, আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, লোকায়ত জীবন, সাম্যবাদ ইত্যাদি প্রবলভাবে উঠে আসতে থাকে।
পঞ্চাশের এ ধারার কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আল মাহমুদ। লোকায়ত জীবন ও সাম্যবাদ তার কবিতায় প্রতিফলিত হয়।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে সোনালী কাবিন ছাড়াও লোক লোকান্তর ও কালের কলস রয়েছে।
ডাহুকী, কবি ও কোলাহল, নিশিন্দা নারী উপন্যাস লিখেছেন আল মাহমুদ। তার গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ির রক্ত, সৌরভের কাছে পরাজিত ও গন্ধবণিক ।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার ছাড়াও একুশে পদক ও জয়বাংলা সাহিত্য পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আল মাহমুদ দীর্ঘ দিন সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় অনেকগুলো দৈনিক পত্রিকায় কাজ করেছেন তিনি। পাকিস্তান আমলে দৈনিক ইত্তেফাকের মফস্বল বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন আল মাহমুদ। স্বাধীনতার পর দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন আল মাহমুদ।
Leave a Reply