স্পোর্টস ডেস্ক: আর এক ধাপ পেরোলেই ছিল ফাইনাল। হলো না। মুশফিকুর রহিমের চেহারা থেকে তবু হাসি
চলে যায়নি। এমনকি সংবাদ সম্মেলনেও না। অন্যদিকে সাকিব আল হাসানের দলের কেউ কেউ এক পাক নেচে নিলেন। গ্রুপ পর্বের শেষদিকে এসে সবকিছু কঠিন হয়ে উঠেছিল। মুশফিকদের কাছে সেখানে দুই দেখাতেই জুটেছিল হার। এবার এলিমিনেটর ম্যাচে সেই চিটাগং ভাইকিংসকে তেমন একটা পাত্তা না দিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পা রাখার আনন্দ আলাদা বটে। ঢাকা ডায়নামাইটসের সঙ্গে বিপিএল ফাইনালের দূরত্ব যে ওই এক ধাপই।
২০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় বলে দেয় গতকাল এলিমিনেটর ম্যাচে খুব লড়তে হয়নি সাবেক চ্যাম্পিয়ন ঢাকাকে। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার সুনিল নারিন প্রথমে ৪ উইকেট নিয়ে কাজটা এগিয়ে রেখেছেন। এরপর ব্যাটিং ওপেন করে ১৬ বলে খেলেছেন ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস। ১৩৬ রানের জয়ের লক্ষ্য আরও সহজ তাতে। নারিনের জন্য ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ এর পুরস্কার। ঢাকা পেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের যোগ্যতা।
রান তোলার জন্য উইকেট তেমন কঠিন ছিল না। টস জিতে চিটাগং ৮ উইকেটে ১৩৫ তুলে বুঝে গেছে এটা জেতার স্কোর না। নারিনের বেদম প্রহার চার ওভারেই এনে দেয় ৪৪। পেসার খালেদ আহমেদ উইকেট মেডেন দিয়ে শুরু করেছিলেন। পঞ্চম ওভারে নারিন চিটাগংয়ের প্রথম শিকার। উপুল থারাঙ্গা খেলেছেন ৪৩ বলে ৭ চারে ৫১ রানের ইনিংস। চিটাগংয়ের আশা নেই বোঝা যাচ্ছিল। এর মধ্যে একাদশ ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে সেই খালেদই হঠাৎ কিছুটা আলো টেনেছিলেন দলের দিকে। টানা দুই বলে রনি তালুকদার (২০) ও সাকিব তার শিকার। সাকিব প্রথম বলেই আউট! ১৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে খালেদের সেরা বোলিং ফিগার এই ম্যাচে। ৪-১-২০-৩। এরপর থারাঙ্গাকে ফেরানো গেলেও নুরুল হাসান সোহান (অপরাজিত ২০) ও কাইরন পোলার্ড (৭ নটআউট) কিছুই কঠিন হতে দেননি।
প্রথম ছয় ওভারে ১ উইকেটে ৪২। ওপেনার ক্যামেরন ডেলপোর্ট (৩৬) দাঁড়িয়ে গেছেন। কিন্তু সাদমান ইসলাম (২৪) ছুটে আসা ইনফর্ম পার্টনারকে ক্রিজের মাঝে দেখেও মুখ ঘুরিয়ে নেন। অসহায় ডেলপোর্ট রান আউট। আরও খানিকটা পর নারিন দুই ওভারে মুশফিক (৮) ও সাদমানকে তুলে নেন। মুশফিককে খুব দরকার ছিল চিটাগংয়ের। কিন্তু ঢাকা প্রতিপক্ষের বড় স্কোরের পথ বন্ধ করেছে চিটাগং ১০০ পেরোনোর পর ৬ রানে তাদের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে। পেসার কাজী অনিকের শিকার দাসুন শানাকা (৭)। জোড়া উইকেট পড়ে এরপর। ইনজুরি থেকে ফিরে রবি ফ্রাইলিনক (১) বড় শট নিতে গিয়ে শক্তি ব্যবহার করতে পারেননি। স্পিন ধরতে না পেরে এলবিডব্লিউর শিকার হার্ডাস ভিলিয়ন (১)। নারিন এই দুই শিকারে চিটাগংকে ১০৯ রানে ৭ উইকেট হারানো দল বানালেন। মোসাদ্দেক শেষ ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত টিকে থাকলেন বলেই না দলের রানটা মোটামুটি বলার মতো হলো। ৩৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় মোসাদ্দেকের ৪০ তার কিছুটা ধারাবাহিক ওঠার প্রমাণও বটে। যদিও ওই রান যোগ করেও চিটাগং চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেনি ঢাকাকে। তাই তাদের বিদায়। ঢাকা আরও এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং ভাইকিংস : ১৩৫/৮ (২০ ওভার) (মোসাদ্দেক ৪০, ডেলপোর্ট ৩৬, সাদমান ২৪, মুশফিক ৮, ইয়াসির ৮, শানাকা ৭, নাঈম ৬*; নারিন ৪/১৫, রুবেল ১/২৭, কাজী অনিক ১/৩৬)।
ঢাকা ডায়নামাইটস : ১৩৬/৪ (১৬.৪ ওভার) (থারাঙ্গা ৫১, নারিন ৩১, রনি তালুকদার ২০, নুরুল হাসান ২০*, পোলার্ড ৭*; খালেদ আহমেদ ৩/২০, নাঈম হাসান ১/২৮)।
ফলাফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : সুনিল নারিন।
Leave a Reply