রোকন উদ্দিন লস্কর :গ্রামীণ সংবাকর্মীদের শতকরা ৮০জনই অস্বচ্ছল। তাদের জীবন চলে টানা পড়েনের মাঝে। এর পর ও আত্বসম্মান নিয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কারও কাছে কোন কিছু চাইতে , লজ্জা লাগে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামীণ জনপদের, ঘটনা, দুর্ঘটনা, অনিয়ম, দুনীর্তি, স্বজন প্রীতি, তুলে এনে, সংবাদপএ ,মিডিয়াতে, প্রচার, সম্প্রচার করে থাকেন। সংবাদ সংগ্রহের প্রতিটি মুহুর্তই গ্রামীন সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকি থাকে। ছোট পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ । সবাই সবাইকে চিনেন। সংবাদ কোন গোষ্ট, বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে গেলেও নেমে আসে তাদের ওপর, শারিরীক, মানষিক নির্যাতন। হুমধামকি তো নিত্যকার ঘটনা। মিথ্যা ও যড়যন্ত মামলায় জড়ানো হয়। এর পর ও দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকে অধিকাংশ গ্রামীণ সাংবাদিক।
প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকির মধ্যেও গ্রামীণ সাংবাদিকরা ঘরে বসে নেই। দায়বদ্ধতা থেকে দেশের মানুষের জন্য কাজ করছেন তারা। প্রশাসন, আইন প্রযোগকারী সংস্হার পাশা পাশি গ্রামীণ সাংবাদিকরা করোনা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে আছেন।
ইতোমধ্যে দেশের কয়েক জন গ্রামীণ সাংবাদিকের শরীরে করোনা পজেটিভ ধরা পরেছে। তাদের দায়িত্ব নেবে কে? সরকার ঘোষণা দিয়েছে কোন সরকারী কর্মচারী ,করোনা পজিটিভ হলে ১০ লাখ ও করোনায মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পাবেন। কিন্তুু সমাজের জন্য দেশের জন্য কাজ করলেও গ্রামীণ সাংবাদিকদের নিজের দায়িত্ব নিজের পরিবারকেই নিতে হবে -এটাই বাস্তবতা।
হয়তো আমার নিজের প্রচারের জন্য কোন দানশীন, নেতা এগিয়ে আসতেও পারে। বৈশ্বিক এ করোনা মহামারীতে দেশের বিভিন্ন স্হানে সরকারী চাল, চুরি ও চলছে। মহামারীর সাথে পাল্লা দিয়ে। এখানে ও গ্রামীন সাংবাদিকরা দায় এড়িয়ে যান নি। গ্রামীণ সাংবাদিকদের কারণেই চাল চোরদের কাহিনী উঠে এসেছে গণমাধ্যমগুলোতে।
একারণে দেশের বিভিন্ন স্হানে অন্তত ২০ জন গ্রামীন সাংবাদিক, হামলা , মামলাসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অনেককে বানানো হয়েছে চাঁদাবাজ। নারী নির্যাতন মামলার আসামী। ভোলা জেলা চাল চুরি সংবাদকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা শুরু হয়ে সব শেষ নরসিংদীতে জনপ্রতিনিধির লোকজনের হাতে এক সাংবাদিক রক্তাক্ত হন প্রকাশ্যে।
মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে পা পড়ছিল। যাক এসব কথা। দেশের অধিকাংশ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গ্রামীণ সাংবাদিক নিয়োগ দেন অবৈতনিক। হাতে গুনা কয়েকটি প্রিন্ট পএিকায়, টিভি, অনলাইন পোর্টাল তাদের প্রতিনিধিদের সম্মানী দেন। যে কারণে শখের বসে মুলত গ্রামীণ সাংবাদিকতায় যুক্ত হন অনেক মেধাবীরা। আবার অনেকের চিন্তা ভিন্ন। ইদানিং অনেক মিডিয়া টাকার বিনিময়ে গ্রামীণ সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে কার্ড একটা দিয়ে মাঠে ছেড়ে দেন।
তারা নীতি নৈতিকতা নিয়ে চিন্তা করেন না। যে কারণে গ্রামীণ সাংবাদিকতা অশনি সংকেতময় । নীতি নৈতিকতা মেনে যারা চলেন ,সাংবাদিকতার পাশাপাশি অন্য পেশায় যুক্ত হন। এর মধ্যে ৮০ ভাগ ই অস্বচ্ছল। বাইরে খুব ভোগ বিলাসী হলে ঘরে তাদের নিদারুন কষ্ট। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
করোনা মহামারীতে লকডাউন, অর্থনৈতিক অচলাবস্হা, গ্রাহক সংখ্যা হ্রাস পাওয়া, কর্মীসংকট, হকার পএিকা বিক্রিতে অনিহাসহ নানা কারণে সংবাদপএগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মখীন।
একারনে জাতীয় অনেক পএিকাসহ আঞ্চলিক পএিকার মুদ্রণ বন্ধ রেখেছে। কিছু এলাকা ভিত্তিক পএিকা মুদ্রণ হলেও অনেকটা অফিস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। গ্রামীণ সাংবাদিকদের আয়ের একটা বড় উৎস হচ্ছে বিজ্ঞাপন। সরকারী অফিস আদালত বন্ধ। লকডাউন। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করায় , পএিকা মুদ্রন বন্ধ থাকায়। ব্যক্তি, কিংবা প্রতিষ্টান, সরকারী বিজ্ঞাপন ও নেই।
এ অবস্থায় গ্রামীণ সাংবাদিকদের অধিকাংশই পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল নেই। ব্যক্তিত্বের কারণে ত্রাণের তালিকাও তাদের নাম নেই। করোনা পরিস্হিতিতে প্রেসকাউন্সিল থেকে গ্রামীণ সাংবাদিকদের প্রনোদনা দেয়ার ব্যাপারে প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয় এই মর্মে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। এর কয়েক দিন পরই গণমাধ্যমে প্রচার হয়। গ্রামীন সাংবাদিকদের প্রনোদনা দেয়ার বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছে।
প্রনোদনা পাওয়া যাবে এমন খবরে গ্রামীণ সাংবাদিকরা আশার আলো দেখে। কিন্তুু স্থগিতদের খবরটি পেয়ে হতাশ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতীর উদ্দ্যেশে দেয়া ভাষণে স্পষ্টভাবে বলেছেন। কে আমারে ভোট দিল , কোন দল, কার, এ বিবেচনায় নয়, যার প্রযোজন তাকেই সরকারী সাহায্য দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য দল মত, নির্বিশেষে সকল শ্রেণী, পেশার মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়। কিন্তুু গ্রামীণ সংবাদ কর্মীদের ক্ষেএে এই বৈষম্য কেন? জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের গণমাধ্যম কর্মীদের তালিকা প্রনয়ন করে তাদের সরকারী প্রনোদনা সহায়তার আওতায় আনার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি চাই।
Leave a Reply