শ্রমিকরা ৩দিনের মধ্যে বন্ধ বাগান চালু চান : সমাধান না হলে ২৩টি চা-বাগান এক যোগে যেকোন কর্মসুচি গ্রহন করবে
নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা চা-বাগান ১৬দিন ধরে বন্ধ করে চলে গেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। রোজগারপাতি নেই। চরম দুরবস্থার শিকার রেমা চা বাগানের শ্রমিকরা। অর্ধাহারে দিন কাটছে শ্রমিকদের। বাগান বন্ধের পরপরই স্থানীয় বাগান পঞ্চায়েত থেকে কিছু চাল দেওয়া হয়েছিল শ্রমিক পরিবারগুলিকে। কিন্তু তাতে ক-দিন চলে? একদিকে যখন দু মুঠো চাল জোগাড়ের দুশ্চিন্তা, আরেকদিকে তখন চিন্তা স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও। অসুস্থ হলে চিকিৎসার টাকা নেই। বন্ধ বাগানের হাসপাতালটিও। শ্রমিকদের কেউ কেউ রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। তবে যাঁরা এখনও পড়ে রয়েছেন, তাঁরা বাঁচার পথ খুঁজতে ব্যস্ত। গত ৫মার্চ রেমা বাগানের মেনেজারের সাথে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় কয়েকজন চা- শ্রমিকদের কর্তৃপক্ষ সৃষ্ট বিরোধের জেরে বাগান বন্ধ করে দিয়ে বাগান তালা দিয়ে চলে যায়। এর পর থেকে চা-বাগান চা-শ্রমিকদের কর্মহীনতায় রয়েছেন। ফলে তারা চিকিৎসাসেবা, রেশনসহ অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন চা-শ্রমিকরা। যার ফলশ্রুতিতে এই চা-বাগানের চা-শ্রমিকদের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও অভাব-অনটন। চা শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। এমনকি চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় অসুখ-পীড়ায় ভুগছে চা-শ্রমিকরা।
শনিবার বিকেলে বংলাদেশ চা- শ্রমিক ইউনিয়ন অন্ত:গত লস্করপুর ভ্যালীর ২৩ টি চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপিত সম্পাদকবৃন্দ রেমা চাবাগানের শ্রমিকদেরকে আর্থিক সহযোগীতা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ চা- শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, লস্করপুর ভ্যালীর সভাপতি রবিন্দ্র গৌড়, সহ-সভাপতি উজালা পাইনকা, সাধারণ সম্পাদক অনিরোদ্ধ বাড়াইক রেমা বাগান পঞ্চাত সভাপতি তনু মুন্ডা, সাধারণ সম্পাদক ডিকেট ভুনার্জী, উজালা পানিকা, খাইরুন আক্তার, সন্ধ্যারানী ভৌমিক,সৌবিত্র কর্মকার, প্রমুখ। আগত অতিথিরা জানান,আগামী ২৪ তারিখের মধ্যে বন্ধ বাগান চালু করতে হবে, সমাধান না হলে ২৩টি চা-বাগান এক যোগে যেকোন কর্মসুচি গ্রহন করবে। এদিকে অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পরছেনা অনেকেই এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন জয়রাগর(৬৫) ,ধনপতিগোয়ালা(৫৫) রাজ কুমারী(৭৫), অঞ্জলা পাইনকা(৭০).টুসু(৬৫) নিয়তি(৭০) তারা বলেন, দাসের মতো জীবন কাটালেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে উৎপাদন ধরে রেখেছেন তারা। তাই জীবন সম্পর্কে শুধু আক্ষেপই ঝরে তাঁদের কণ্ঠে। চা বাগানের মানুষের জীবন কষ্টে-দুর্দশায় যায়, মানুষ মনে করে যে, আমাদের এই রকমই দিন যাবে,‘‘সারাজীবন কষ্ট করে করে আমাদের দিন পার করব, যাওয়ার তো আর কোনো জায়গাও নাই। আর কোনো কিছু করারও নেই আমাদের। ভাবতে ভাবতে এরকমই তাঁরা জীবনযাপন পার করে।
Leave a Reply