শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন

হাতির হামলার আশঙ্কায় ভারতীয় সেনাবাহিনী

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯
  • ৩৭১ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্কঃ বিরাট জঙ্গল। পাশেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি। জঙ্গল থেকে দলে দলে বন্য হাতি এসে তাই বারবার আক্রমণ করে আসছিল সেনাবাহিনীর উপর। আর হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচার কোনো উপায় না পেয়ে সেনা ঘাঁটির চারপাশে লম্বা পেরেক পুতে দিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের আমসাং জঙ্গলের সেনা ঘাঁটিতে।

জানা গেছে, জঙ্গলে বসবাসরত বুনো হাতির চলাচলের স্থানেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি নির্মাণ করা হয়। আর তাই আমসাং জঙ্গল থেকে প্রায়শই হাতি ঢুকে পড়ে সেনা শিবিরে। শুধু কি তাই! ভিতরে ঢুকে চলে হাতির আক্রমণ আর তছনছ। একপর্যায়ে হাতির সাথে আর না পেরে রণে ভঙ্গ দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এবার আর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মোকাবেলা নয়, হাতি যেন আর না আসতে পারে তাই চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিল সেনাবাহিনী।

এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এমন অমানবিক ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত আইন বিরোধী কাজের তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে দেশটির পশুপ্রেমীরা। হাতি ঠেকাতে রাস্তায় কাঁটা ও পেরেক বিছিয়ে দেয়ার ঘটনা জানতে পেরে সেনাবাহিনীর কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

আসাম রাজ্যের আমসাং অভয়ারণ্যের গা ঘেঁষেই গুয়াহাটির নারেঙ্গি এলাকায় বিশাল সেনা ঘাঁটি-টি অবস্থিত। সেখানে প্রায়ই ঢুকে পড়ে হাতি। কখনও হাতির বাচ্চা নালায় পড়ে যায়। কখনও দেয়াল ভেঙে দেয়। তাই হাতি রুখতে সেনাবাহিনী সাপ্লাই ডিপোর সামনে কংক্রিটের উপরে তীক্ষ্ণ পেরেকের চাদর বিছিয়ে দিয়েছে। জঙ্গল ও সেনাঘাঁটির মাঝামাঝি অংশে ওই চাদরে পা দিয়ে জখম হচ্ছে হাতিরা।

দেশটির বন বিভাগের অভিযোগ, ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই অমানবিক কর্মকান্ডে ইতোমধ্যেই দুইটি হাতি মারা গেছে। পেরেকের আঘাত পাওয়ার পর পায়ের ঘা থেকে সংক্রমণ ও সেপ্টোসেমিয়া হয়ে ওই দু’টি হাতির মৃত্যু হয়।

বন বিভাগ আরো বলছে, পেরেকের আঘাতে আহত আরো একটি হাতিকে চিকিৎসা করে সুস্থ্য করে তোলা হয়েছে। তিনটি হাতি জখম হয়ে জনবসতির কাছে এসে পড়েছিল বলে তাদের ব্যাপারে জানা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পেরেকে জখম বা মৃত হাতির সংখ্যা বেশিও হতে পারে। হয়তো অনেক হাতি জখম অবস্থায় জঙ্গলে ফিরে গিয়ে সংক্রমণে মারা গিয়েছে।

গুয়াহাটি বন্যপ্রাণী ডিভিশনের ডিএফও প্রদীপ্ত বড়ুয়া জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ নিরীহ বন্যপ্রাণীদের জন্য অত্যন্ত নিষ্ঠুর। সেনাবাহিনীর ৫১ সাব এরিয়ার স্টেশন হেডকে গত ২৫ ডিসেম্বর চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয় যে, কাঁটা ও পেরেকের চাদরের বদলে সৌরশক্তি চালিত বেড়া ও পরিখা তৈরি করে হাতিদের ঢুকে পড়া আটকানো হোক।

তিনি আরো বলেন, বন বিভাগের দুই কর্মীকে সেনা ঘাঁটি থেকে হাতি তাড়ানোর কাজে স্থায়ী ভাবে মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধানকে আবারো চিঠি পাঠানো হয়। ডব্লুডব্লুএফের কো-অর্ডিনেটর অমিত শর্মা জানান, সেনাবাহিনীর সঙ্গে গত বছরই এ নিয়ে তাদের আলোচনা হয়। সেনাবাহিনী কাঁটার চাদর সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করা হয়নি।

এদিকে লোক জানাজানি ও তীব্র সমালোচনার পর বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট পি খোংসাই জানান, সেনাবাহিনী কাঁটার চাদর সরানোর কাজ শুরু করেছে।
সুত্রঃ ইনকিলাব

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com