নুর উদ্দিন সুমন : হবিগঞ্জের চুনারঘাটে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতিমার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বদলীর বিষয়টি হঠাৎ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারন মানুষের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তার বদলীতে একজন ভালো অফিসারে শুন্যতা হলো বলে এলাকার সর্বত্র আলোচনার বিষয় চলছে। ভূমি অফিস মানেই দুর্নীতির আখড়া এমন ধারণা উপজেলার প্রায় মানুষের । এ নীতিতে বিশ্বাসী নন নুসরাত ফাতিমা তিনি চলতি বছরের গত ২৪শে সেপ্টেম্বর মাসে যোগদান করেন এবং তার অফিস দুর্নীতি মুক্ত বলে ঘোষণা করেন তিনি। তার কর্ম কান্ডে নড়ে চড়ে বসে ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা। উপজেলার ভূমি অফিস গুলো ঢেলে সাজানো হয়। পালটে যায় অফিস গুলোর চিত্র। সর্বত্রই কাঙ্খিত সেবা চালু হয়। মাত্র ২মাস ২৫দিনের মাথায় তার কার্যক্রমে প্রায় সকলে সর্বত্রই ভূমি অফিসের সেবার গ্রাহকরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি যোগদানের পর
অল্প সময়ে উপজেলা ভূমি অফিসকে দালাল ও দুর্নীতি মুক্ত ভুমি অফিস হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। অফিসে সুবিধা নেয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। যোগদানের পর থেকেই নান্দনিক ও জনবান্ধব ভূমি অফিস গঠনের লক্ষে তিনি বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করেন। অফিসের সামনে জলাবদ্ধতা দূরীকরনে তিনি সামনের রাস্তা সংস্কার করেন।
অফিসের সুদৃশ্য গেট দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমেই চোখে পড়বে দু’পাশে নানা প্রজাতির দেশী-বিদেশী ফুলের বাগান। গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা সেবা প্রত্যাশীদের জন্য সুসজ্জিত বসার স্থান খলিয়ান। খলিয়ানে সেবা প্রত্যাশীদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ।
এছাড়াও মামলা সংক্রান্ত জটিলতা যাতে না হয় তার জন্য রেকর্ডরুম সুবিন্যস্ত করেছেন। করা হয়েছে রেকর্ড রুমের তালিকা যেমন কোন কোন নথি কোথায় প্রেরণ করা হয়েছে তা জানার জন্য। মাত্র অল্পদিনে তিনি চুনারুঘাট ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। অফিস সুত্রে জানাগেছে দায়িত্ব পালনকালে নুসরাত ফাতিমা ১১টি অভিযান, ৩১টি ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২৫লক্ষ টাকারও বেশি অর্থদণ্ড করেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ রয়েছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী । ইভিজিং এর বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন নুসরাত ফাতিমা। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি জমি উদ্ধার করেছেন তিনি। ভ্রাম্যমান আদালতে ছাড় দেননি চোরা কারবারিদেরও করেছেন সরকারি চোরাই গাছসহ প্রাইভেট কার জব্দ। জরিমানা করেছেন ব্রিক ফিল্ডে, অনুমোদনহীন করাত কল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। করেছেন বাজার মনিটরিং। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরির কারনে বেশকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জরিমানা করেছেন। উচ্ছেদ করেছেন বাজারে দু’পাশের অবৈধ স্থাপনাও। এমন বেশ কয়েকটি কাজের নজির রেখেছেন তিনি। এছাড়াও ভূমি অফিসে দৌড়াত্বে প্রতারকদের দন্ড দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রীয় সকল কর্মসূচিতে ছিলেন অগ্রসরমান। জেলা প্রশাসনের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করে সার্বিকভাবে সহযোগীতা করতেও দেখা গেছে তাকে। তার মত একজন দক্ষ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে চুনারুঘাট মানুষ সহজে ভুলবেনা বলে অনেকেই জানিয়েছেন। তিনিও যেন সুষ্ঠভাবে বিদেশে সঠিকভাবে পৌছতে পারেন সেজন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন।
Leave a Reply