ডেস্ক নিউজঃ কমলগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে গতকাল রোববার দুপুরে বয়ে যাওয়া আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ী-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময়ে বজ্রপাতে কেওলার হাওরে পতনঊষার গ্রামের রশিদ মিয়ার প্রায় ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক শতাধিক গাছ পড়ে শমশেরনগর-কুলাউড়া সড়কে আড়াইঘন্টা যোগাযোগ বন্ধ ছিল। অপরদিকে আখাউড়া-সিলেট রেলপথের শমসেরনগর এয়ারপোর্ট রোডে ব্যাপক গাছ পড়ায় লাউয়াছড়া পাহাড়ে রেল যোগাযোগ কিছু সময় বন্ধ ছিল। এ সময় ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ও সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া স্টেশনে আটকা পড়েছিল। বৈদ্যুতিক লাইনের তার ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। স্থানীয়রা জানান, প্রবল গতিতে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে পৌরসভাসহ উপজেলার মুন্সিবাজার, রহিমপুর, শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও প্রায় আড়াই শতাধিক ঘর-বাড়ি। রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে। বাড়িঘর, রাস্তার পাশে শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী, শমশেরনগর বিমান ইউনিটের সদস্যবৃন্দ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছ সরিয়ে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়। শমশেরনগর বিমান বাহিনী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি পড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে। কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ জানান, ঝড়ে পৌর এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক সাগর বলেন, ইউনিয়নের প্রায় ২ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ৩ শতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়ন সদস্য সফিক মিয়া বলেন, ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে, তবে পুরোপুরি তথ্য সংগ্রহ চলছে। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোবারক হোসেন সরকার বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের পরপরই শতাধিক স্থানে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছগাছালি ভেঙ্গে তার ছিড়ে ও লাইন মাটিতে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর আসছে। কুলাউড়া-ফেঞ্চুগঞ্জ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বলেন, লাইন সচল রয়েছে। রেলপথের যেখানে গাছ পড়েছে সেসব গাছ কেটে পরিস্কার করা হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কমলগঞ্জ পৌরসভা, পতনঊষার ও মুন্সিবাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সুমি আক্তার বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply