স্টাফ রিপোর্টারঃ বানিয়াচং উপজেলা সদরের মজলিসপুর গ্রামে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে জামাই শ্বশুরের দন্দ্বের জেরে শ্বশুর জামাইয়ের লোকজনের মধ্যে ২ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর ও অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সাথে সাথে একদল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য হয়। জানা যায়, গতকাল ৩০ নভেম্বর শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মুনসুর মেম্বারের লোকজনকে দেখে গতকাল আহত হওয়া নূর মোহাম্মদ মিয়ার লোকজন হামলার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। এ সময় ভয়ে দৌড়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচাতে মজলিসপুর দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দা মখলিছউর রহমানের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন কয়েকজন। এ সময় এই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য হাক ডাক শুরু করেন হামলাকারীরা। এক পর্যায়ে এই বাড়িতে হামলা চালিয়ে কেউ কেউ বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং ঘরের ভিতরে গিয়ে আশ্রয় নেওয়াদের উপরে হামলা চালান। এ সময় বাড়িঘর ভাংচুর করার অভিযোগ করেন বাড়ির লোকজন। এই খবরটি মুনসুর মেম্বারের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে তারাও পুকুরের চারদিক থেকে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। আস্তে আস্তে সংঘর্ষটি বিরাট আকার ধারণ করে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার সর্দার প্রধানগন চেষ্টা করেন এবং এক পর্যায়ে মসজিদের মাইকে মাইকিং করে তাদেরকে অনুরোধ করেন সংঘর্ষ সামাল দেওয়ার জন্য। এমন পরিস্থিতিতে মাগরিবের আজানের পূর্বে বানিয়াচং দারুল কোরান মাদ্রাসা থেকে একদল আলেমসহ অন্যান্য আালেম ওলামাগণ নারায়েতকবির আল্লাহু আকবর ধ্বনি আওয়াজ তুলে সরাসরি সংঘর্ষের মধ্যেস্থলে গিয়ে ঢুকে পড়েন এবং তাদের প্রানপন চেষ্টা ও সাহসিকতার কারনে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ সামাল দিতে সক্ষম হন। উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জামাই মুনসুর মিয়ার লোকজনের হামলার শিকার হয়ে আপন চাচা শশুর আহত হয়ে সিলেট চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনার জের ধরে ওই গতরাত থেকে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তপ্ত বিরাজ করছিলো।
জানাযায়, মজলিসপুর গ্রামের মৃত বাছির উল্বার পুত্র নূর মোহাম্মদ মিয়া (৬৬) মোটরসাইকেল যোগে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে মাতাপুর মহল্লার ব্রীজ পাড় হয়ে মজলিসপুর গ্রামের ভিতরে পৌঁছা মাত্র প্রতিপক্ষ তার জামাতা ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়ার লোকজন মোটরসাইকেল এর গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে থাকে আহত করে পালিয়ে যায়। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এই হামলার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে মজলিশপুর গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিল। অভিযোগে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আপন ভাতিজীর জামাই এই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়া এই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। মুনসুর মেম্বার তার আপন চাচা শশুর নূর মোহাম্মদ মিয়াকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যেই এই হামলাটি চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন নূর মোহাম্মদ মিয়ার লোকজন। এই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য জালাল মোহাম্মদ মিয়ার কন্যাকে বিয়ে করেন বর্তমান ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়া। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে প্রশাসন এই হামলার ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর পর মজলিসপুর গ্রামে সেনাবাহিনীর টহল টিম ও থানা পুলিশের টহল টিম পর্যবেক্ষন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রশাসন। এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কবির হোসন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার পর পরই আমার থানা পুলিশ কয়েকবার এলাকা গিয়ে টহল দিয়েছেন। বর্তমানে সেখানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
Leave a Reply