বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নবীগঞ্জের বোয়ালজুর গ্রামে কৃষকের সবজি বাগান কর্তন করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি মাধবপুরে ৫০ কেজি গাঁজাসহ যুবক গ্রেপ্তার হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে দুই সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে একজন নিহত চুনারুঘাটে বাড়ির রাস্তা নিয়ে বিরোধ ॥ একই পরিবারে বৃদ্ধসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখম কমলগঞ্জে ডাকাতি করতে গিয়ে হবিগঞ্জের ৪ যুবক আটক মাধবপুরে গ্রাহকের আমানত নিয়ে নিশান’র পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অফিসে কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ চুনারুঘাট সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৮ বস্তা গাঁজা উদ্ধার মাধবপুর জায়গা নিয়ে বিরোধ দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০ মহান বিজয় দিবস আজ নবীগঞ্জে আমেরিকা প্রবাসীর জায়গার ডোবা থেকে রাতে আঁধারে মাছ চুরি করে নিয়েছে একদল দূর্বৃত্তরা

বানিয়াচঙ্গের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে সংঘর্ষে নারী নিহত

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১
  • ৩৪৩ বার পঠিত

বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পরিবারের সংঘর্ষে ফিকলের আঘাতে গোলাপজান বিবি (৬৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। তবে এই হত্যা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের স্বজনরা বলছেন, প্রতিপক্ষের ফিকলের আঘাতে গোলাপ চান বিবি মারা গেছেন। অপরদিকে প্রতিপক্ষের দাবি, তাদের ফাঁসাতে ছেলে মোহাম্মদ আলী ফিকল দিয়ে মা গোলাপ জান বিবিকে খুন করেছেন। তবে পুলিশ বলছে গোলাপ চানকে কারা হত্যা করেছে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনার পর পরই প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্র জানায়, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী ও তার চাচাত ভাই আব্দুল কাদিরের মধ্যে বাড়ির সীমানা, পানি নিস্কাশনের রাস্তাসহ জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে মামলা মোকদ্দমা। সম্প্রতি বানিয়াচং থানা পুলিশ উভয়পক্ষকে ডেকে এ ঘটনাটি নিষ্পত্তি করার আশ্বাস দেন। এর মধ্যে বুধবার সকালে মোহাম্মদ আলী ও তার চাচাত ভাই আব্দুল কাদিরকে নিয়ে এলাকার মুরুব্বীয়ান সামাজিক বিচারে বসেন। বিচারের মধ্যে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে ফিকলের আঘাতে মোহাম্মদ আলীর মা গোলাপ জান বিবি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ অবস্থায় মোহাম্মদ আলী তার মাকে কাদির গংরা হত্যা করেছে বলে শোর চিৎকার শুরু করে লোকজন নিয়ে কাদির গংদের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং-সার্কেল) এর নেতৃত্বে বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন, ওসি তদন্ত প্রজিত দাশসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ সময় পুলিশের কাছে গোলাপ জান বিবি’র ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, কাদির মিয়া গং তার মাকে ফিকল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে। অপরদিকে পুলিশকে জানানো হয়, নিহত গোলাপ চান বিবির ছেলে মোহাম্মদ আলী ফিকল দিয়ে আঘাত করে তার মাকে হত্যা করেছে। এসব তথ্য ও নিহতের আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ বিভ্রান্তের মধ্যে পড়ে।

পরবর্তীতে সেখানে পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালিকের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত টিম গিয়ে দিনভর তদন্ত করে। হত্যার ঘটনায় রহস্য সৃষ্টি হওয়ায় নিহতের ছেলে মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা। এ সময় পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকারী যারাই হোক পুলিশ তদন্ত করে তা বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। শুধু হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না যারা বাড়িঘর ভাংচুর ও লুট করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সন্ধ্যায় নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। এদিকে সন্ধ্যায় আব্দুল কাদির জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে তার চাচাত ভাই মোহাম্মদ আলীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে তার বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। গতকাল আমাদের আত্মীয় স্বজনরা বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে সামাজিক বিচারে বসেন। কিন্তু মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী ও মেয়ে সভাস্থল থেকে বের হয়ে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে সে আমাদের উপর আক্রমণ করে। এতে মুরুব্বীয়ান বাঁধা দিলে সে ঘরে গিয়ে তার মাকে ফিকল দিয়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তার মা মারা যায়। পরে সে তার মাকে হত্যা করা হয়েছে বলে চিৎকার শুরু করে এবং বাড়ি থেকে নেয়া তার নয়া পাথারিয়া গ্রামের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আমাদের ঘর বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে। তারা আমার ঘরে থাকা নগদ ২ লাখ টাকা, ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভিসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও আমার ২টি গরু, ঘরের থাকা সিদ্ধ ১শ মণসহ মোট ৪শ মণ ধান লুট করে নিয়ে যায়। আমার ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে। আমার আত্মীয় শাহেদা খাতুন ও রেনু মিয়ার ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। সব মিলিয়ে আমার পক্ষের ৩টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। তিনি বলেন- এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এ দিকে রাতে এ ঘটনার সর্বশেষ তথ্য জানার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কুমার রঞ্জনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com