সেবা ডেস্কঃ নিজ এলাকায় সফরে এসে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেললেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি। মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে তার চোখজুড়ে পানি এসে যায়। বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। এ সময় তিনি বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলআমিন পবিত্র কোরআন শরীফে বলেছেন, আমি যাকে খুশি সম্মান দিই, আমি যখন মনে করি তখন আবার তা কেড়ে নেই। তিনি বলেন, এ সম্মান এবং ইজ্জত যা কিছু আমার নামে সাথে যুক্ত হয়েছে সবকিছুই আপনাদের দোয়া এবং আশির্বাদ। এ জন্য যদি কোন কৃতিত্ব থাকে তবে আমার নির্বাচনী এলাকা মাধবপুর-চুনারুঘাটসহ হবিগঞ্জ জেলা ও দেশবাসীর। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও কখনও নিজেকে সংসদ সদস্য হিসেবে মনে করে চলিনি। ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করেছি নিজের সীমাবদ্ধতার মধ্যে চলার। বাবা সাবেক এমএনএ মাওলানা আসাদ আলীর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, রাজনীতিতে এসেছি মূলত বাবার অনুপ্রেরণায়। পারিবারিক সূত্র ধরেই ছাত্ররাজনীতে যুক্ত হয়েছিলাম। কোনদিন এমপি, মন্ত্রী হতে হবে তা আমার কল্পনার মাঝেও ছিলনা। আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত হই। পাশাপাশি যেন এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখি। তাদের সুখে, দুঃখে পাশে দাঁড়াই। আমি শুধু আমার বাবার ইচ্ছার প্রতিফলনই ঘটানোর চেষ্টা করেছি। কতটা সফল হয়েছি জানিনা। মানুষ আমাকে শ্রদ্ধা করে, ভালবাসে। তা নিয়েই আমি পেশাগত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বাবার নির্দেশে ২০০৪ সাল থেকে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় আমি গিয়েছি। এমন কোন সপ্তাহ নেই যখন আমি আসিনি। অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করতো প্রতি সপ্তাহে আপনি কি কারণে আসেন। আপনি কি করবেন তাও বলেননি। আসলে নির্বাচন করা, এমপি হওয়া এগুলো আমার কাছে অনেকটা দূরুহ ব্যাপার মনে হতো। কিন্তু আমার পিতার উপদেশ মানুষের ভালবাসার চেয়ে বড় কিছুই নাই। আমি মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছি।
একটি স্মৃতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রথম যখন এমপি নির্বাচিত হই তখন মাধবপুরে হাটের দিন ছিল। আমার সাথে প্রচুর মানুষ। ছেড়া জামাকাপড় পড়া, গাঁঢ় চশমা চোখে একজন ব্যক্তি আমার সামনে এসে হাজির হলেন। আমি ধরে নিয়েছিলাম তিনি আমার গ্রামের। বার বার বলছে আমার একটি কথা রাখবেন কি-না। ভাবলাম কোন টাকা পয়সা চায় কি-না। দরিদ্র মানুষ। কয়েকবার বলার পর অনেকটা অসস্তুষ্টির সূরে আমি বললাম বলে ফেলেন। তার নাম তালেব আলী। পরে বললেন, আপনার বাবার সততা আপনি ধরে রাখবেন। এ কথা বলেই প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকি আর মন্ত্রী যাই হইনা কেন সারা জীবন তার সে উপদেশ আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমূখ।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে প্রতিমন্ত্রী হবিগঞ্জ সার্কিট হাউজে এলে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডঃ মোঃ আবু জাহির এমপি, সাধারণ সম্পাদক এডঃ মোঃ আব্দুল মজিদ খান এমপি, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডঃ আবুল ফজল, এডঃ মোঃ আলমগীর চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডঃ আব্দুল আহাদ ফারুক, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক এডঃ শাহ ফখরুজ্জামান, বিপি-জিপি এডঃ আব্দুল মোছাব্বির বকুলসহ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply