প্রথমসেবা ডেক্সঃ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে ঘরে থাকতে থাকতে মানুষের মধ্যে নানাবিধ মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। একঘেয়ে জীবন, রুটিন ব্রেক, আর্থিক সমস্যা, ঘুমের ব্যাঘাতের জন্য মানুষ খিটখিটে মেজাজের হয়ে যায়। তারমধ্যে বিষণ্ণতা, পোস্ট ট্রোমাটিক স্টেস ডিসঅর্ডার, বার বার হাত ধোয়ার ফলে ওসিডি, ঘুমে সমস্যা, ক্ষুধামন্দা, বুকে ধড়ফড়ানি, অশান্তিসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের দেখা দিতে পারে সাইবার এডিকশন কারণ স্কুল বন্ধ, সারাদিনই ব্যস্ত থাকছে ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ নিয়ে। আর তাই এসময়ে কিছু অতিরিক্ত যত্ন নেয়া যেতে পারে। যেমন: নিজেকে দিনভর সচল রাখুন।
নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা দূর করতে গান শুনুন, বই পড়ুন, ছবি আঁকুন, ফুলের বাগান তৈরি করুন এবং বিনোদনমূলক কিছু দেখার চেষ্টা করুন।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। বয়স্ক মানুষেরা মৃত্যু ভয়ে ভুগতে পারেন, সেক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে সময় কাটান এবং তাদের কথা শুনুন। বাচ্চাদের এমনভাবে ব্যস্ত রাখুন যাতে তারা উদাস এবং একাকীত্বে না ভোগে। যদি আপনি উদ্বেগ অনুভব করেন তবে কয়েক মিনিটের জন্য শান্তভাবে বসে গভীর শ্বাস- প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার অনুশীলন করুন। অপ্রয়োজনীয় চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। মনকে শান্ত রাখতে এটি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। যদি আপনি রাগ এবং বিরক্তবোধ করেন তবে পেছন থেকে সংখ্যা গোনা অর্থাৎ ১০ থেকে ১ পর্যন্ত গণনা করে মনকে শান্ত করুন। আপনি যদি একাকীত্বে ভোগেন তবে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন। কারণ ছাড়া অযথা আতঙ্কিত হবেন না। ভুল বা জাল তথ্য বহন করা চাঞ্চল্যকর সংবাদ বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলো থেকে দূরে থাকুন। কে অসুস্থ হলেন, কতজন অসুস্থ হলেন এবং কীভাবে হলেন সে সম্পর্কে সবসময় আলোচনা করা বন্ধ করুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন। তামাক, অ্যালকোহল এবং অন্যান্য ড্রাগ সেবন করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এই সময়ে দাঁড়িয়ে এগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করতে পারে। আপনি যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তবে আতঙ্কিত হবেন না। মনের জোর বজায় রাখুন, মনে রাখবেন এই রোগে বেশিরভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে উঠছেন। সকাল এবং সন্ধ্যায় কিছু শারীরিক যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন করুন। একা না থেকে, পরিবারের সকলের সঙ্গে সময় কাটান। দিনগুলো ভালোভাবে উপভোগ করুন।
ডা. মো. শফিউল ইসলাম খালেদ: এসোসিয়েট প্রফেসর অব সাইকিয়াট্রি, জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
Leave a Reply