নুর উদ্দিন সুমন : সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সুবিধাবঞ্চিত সদস্যদের নিয়ে নেটওয়ার্কিং সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। (২৫ নভেম্বর ) সোমবার দুপুরে উপজেলা হল রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নুসরাত ফাতিমা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইয়াছমিন, চুনারুঘাট উপজেলা সিআরএফ কর্মকর্তা রোমানা মুক্তা, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর তারিফা চৌধুরী, প্রজেক্ট অফিসার হাফিজ উদ্দিন, সহকারী প্রজেক্ট অফিসার ইউসুফ আলী, সমাজ কর্মী রেদওয়ান আলী খান ,রুমা মজুমদার প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের প্রায় ৩৭ জন সদস্য অংশগ্রহণ করে। সভায় ক্লাবের সদস্যরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা, সফলতা ও প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন । অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ও আইনগত অপরাধ। বাল্যবিয়ের ফলে মেয়ে শিশুর জন্য অধিকার লঙ্ঘন হয়। প্রত্যেক কিশোর-কিশোরীর শারীরিক ও মানসিক পরিপূর্ণতা লাভের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় প্রয়োজন। কিন্তু অভিভাবকরা বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতন না থাকায় কন্যা শিশুদের অল্প বয়সে বিয়ে দিচ্ছে। ফলে মেয়েরা অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। তাই মেয়ে শিশুদের সুরক্ষার জন্য মেয়েদের ১৮ বছর ও ছেলেদের ২১ বছরের আগে বিয়ে নয়। কিশোরীদের ভালোর জন্য বাল্যবিবাহ বন্ধ করা করতে কিশোরীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে জানান। প্রয়োজনে সরকারের হেল্প লাইন নম্বরের সাহায্য নেওয়ার কথা বলেন। এর মাধ্যমে বাল্যবিয়ে সহজেই রোধ করা যাবে বলে মনে করেন তারা। বক্তারা আরও বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে অভিভাবক, কিশোর-কিশোরী, ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে কিশোর- কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা মিলে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এর প্রকল্পের সহায়তায় এমসিপিআই আওতায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের অংশগ্রহণে এই নেটওয়ার্কিং সভার আয়োজন করা হয়, কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা তাদের নানা ধরনের সমস্যা, সফলতার গল্প ও আগামীদিনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে শিশু বিবাহ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকার ও কর্মসূচির আলোকে জেলায় ইউনিসেফের সহায়তায় এমসিপিআই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার চুনারুঘাট ৩৭টি ও বানিয়াচং ৪০টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। এই কর্মসূচি কিশোর-কিশোরীদের কমতায়ন, সচেতনতা বাড়ানো, তাদের অভ্যাস ও আচরণগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা ও সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে অবদান রেখে চলছে।
Leave a Reply