শেখ মোঃ হারুনুর রশিদ,চুনারুঘাট।। চুনারুঘাটে রিনা আক্তার(৩৫) নামের এক স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে । এঘটনায় স্বামী পলাতক রয়েছে।গত মঙ্গলবার দিবাগতরাত চুনারুঘাট পৌরশহরের বাল্লারোডস্হ সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী সাফিয়া খাতুনের ভাড়া দেওয়া টিনসেটের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত রিনা বাল্লারোডস্হ মানিক মিয়ার হোটেলে রান্নার কাজ করতেন।গতকাল বুধবার সকাল ৯টা বাজলে ও রিনা হোটেলে না যাওয়ায় হোটেল কর্তৃপক্ষের দুলাল নামের একজন রিনার বাসায় গিয়ে ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায় এবং তিনি দেখতে পান নিস্তেজ অবস্থায় রিনা বিছানায় পরে আছে।তখন দুলাল মিয়া বাড়ির মালিককে ডাক দিলে মালিক সাফিয়াসহ আশপাশের লোকজন এসে দেখেন রিনার নিতর দেহটি বিছানায় পড়ে আছে এবং গলায় শ্বাসরোদ্ধ করে মেরে ফেলার চিহ্নসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লিলাফুলা জখম।সাথে সাথে সাফিয়া থানা পুলিশকে খবর দিলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।এবং লাশটি উদ্ধার করে সুরতহালের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।বাড়ির মালিক সাফিয়া আক্তারের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন,মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তারা তাদের ঘরে একসাথেই ছিল।কিন্তু সকালে বিছানায় রিনার লাশটাই শুধু পড়ে থাকতে দেখা গেছে।কুলাঙ্গার স্বামী ফরিদকে পাওয়া যায়নি।এতে তারা ধারণা করেছেন স্বামী ফরিদ রিনাকে শ্বাসরুদ্ধে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।
হত্যার কোন কারণ আপনি আঁচ করতে পারেন কিনা?
এমন প্রশ্নের জবাবে সাফিয়া বলেন,ফরিদ রিনাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করত।গত ৩ দিন আগে রিনা আমার কাছে এসে বলেছে তাঁর বেকার স্বামী ফরিদ মিয়া আনারস ব্যবসা করার কথা বলে একটি সমিতি থেকে ৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলেছে।কিন্তু বাড়ির মালিকের সুপারিশ ছাড়া সমিতি টাকা দিচ্ছেনা।তখন তিনি রিনাকে বলেছেন এসব আমি বুঝিটুজি না।দু-তিন দিন যাক,দেখা যাক কি করা যায়।এভাবেই বললেন বাড়ির মালিক সাফিয়া।
রিনা ও ফরিদের পরিচয় ও বিয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে সাফিয়া বলেন।
তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে রিনার মা এশা আক্তার তার অফিসে ঝিয়ের কাজ করতেন।এই সুবাদে রিনা ও তার স্বামী ফরিদ মিয়াকে দেড় মাস আগে বাসা ভাড়া দেওয়া হয়।তিনি বলেন
রিনা চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ও এশা বেগমের মেয়ে।তার আগে ও একটি বিয়ে হয়েছিল রিনার।৩ টি সন্তান ও আছে।তারপর অজানা কারণে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে মৌলভীবাজার একটি কলোনিতে কাজের উদ্দেশ্যে যায় রিনা।সেখানে ফরিদ ও কাজ করত।এক পর্যায়ে ফরিদ ও রিনার মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে দুজনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।এরপর চুনারুঘাটে এসে বাসা ভাড়া নেন তারা।স্বামী ফরিদ মিয়া নাসিরনগর থানার আসুরাইল ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের বাসিন্দা।তারও স্ত্রী,৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে একটি সংসার আছে।সংসার রেখেই রিনাকে বিয়ে করেছিল ফরিদ।এব্যাপারে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)কে এম আজমিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে রিনার স্বামী ফরিদই তাকে শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করেছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply