নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রধানের আদালতে বুধবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী। মামলায় ইউএনও’র অফিস সহকারী হরিপদ দাসসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৬ মার্চ বাহুবল উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের করাঙ্গী নদীর বাঁধে মাটির কাজের দুই লাখ টাকার বিলের একটি চেকে সই করার জন্য ইউএনও মো. জসিম উদ্দিন তার অফিস সহকারী হরিপদ দাশকে উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মো. মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছে পাঠান। কাজটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন না করায় তিনি চেকে সই দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় অফিস সহকারী হরিপদ তাকে বলেন ইউএনও নির্দেশ দিয়েছেন চেকটি সই করার জন্য। কিন্তু তাতেও প্রকৌশলী রাজি হননি। পরে অফিস সহকারী চেক সই না দেয়ার কথা ইউএনও জসিম উদ্দিনকে জানান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তিনি সঙ্গে আরও কয়েকজনকে নিয়ে প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়ে তাকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। পরে তাকে ইউএনও’র কক্ষে নিয়ে আটক রাখা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. আবু জাকির সেকান্দর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। পরে মুচলেকা দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মো. মহিউদ্দিন ছাড়া পান। এ ঘটনায় প্রকৌশলী নিজের ও তার বিভাগের কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন।
মামলা দায়েরের পর শুনানীশেষে সন্ধ্যায় বিচারক মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টেকেশন পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রকৌশলীকে আটকের বিষয়টি বিভিন্ন স্থানে জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলীরা। তারা ইউএনও’র বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেন।
এদিকে, বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এলে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেন। এতে ওই প্রকৌশলীকে আইন অমান্য করে হাতকড়া পরানো ও গ্রেফতার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৬ এপ্রিল ইউএনও জসিম উদ্দিনকে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তা আরেকজন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন না। এটি যেমন আইন বিরোধী, তেমনি সরকারি চাকরি নীতিমালা বিরোধী।
Leave a Reply