অনলাইন ডেস্ক: ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যে রোগে অষুধ, শরীরচর্চা এবং খাওয়া-দাওয়া নিয়ম মেনে করলে তা নিয়ন্ত্রণে থাকে বটে, কিন্তু কোনো ভাবেই সেটিকে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়। রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরে কী ধরণের সমস্যা হয় তা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই অবগত। কিন্তু সমস্যা হলো, ডায়াবেটিস সম্পর্কে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা রোগ এবং রোগীর সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে। আসুন জেনে নেয়া যাক, ডায়াবেটিস সম্পর্কে তেমনই কয়েকটি প্রচলিত ধারণা, যেগুলো মোটেই সঠিক নয়।
১) ডায়াবেটিস ধরা পড়লে স্টার্চ বা শর্করা জাতীয় খাবার একেবারেই খাওয়া চলে না, এমনটাই ধারণা বেশির ভাগ মানুষের। তবে বাস্তবে এ ধরণা সম্পূর্ণ ভুল! কারণ, ডায়েটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্টার্চ বা শর্করা জাতীয় খাবার। তাই কখনই শর্করা জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকা থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেয়া উচিত নয়। বরং কম পরিমাণে খাওয়া উচিত।
২) বেশির ভাগ মানুষেরই এটা ধারণা যে, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মিষ্টি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। বাস্তবে এ ধরণা মোটেই সঠিক নয়! কারণ, নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে মিষ্টি সকলেই খেতে পারেন। বরং চিকিত্সকদের মতে, শুধু ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেই নয়, বেশি মিষ্টি খাওয়া যেকোনো মানুষের পক্ষেই ক্ষতিকর।
৩) ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা কখনো রক্তদান করতে পারেন না, এমনটাই ধারণা বেশির ভাগ মানুষের। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কারণ, শুধুমাত্র যারা নিয়মিত ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নেন, তারাই শুধু রক্তদান করতে পারেন না। বাকিদের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে, রক্তদানে কোনো সমস্যা নেই।
৪) অনেকেই মনে করেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সব সময় উচিত খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণে রেখে যতটা সম্ভব কম পরিশ্রম করা। তবে এ ধরণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কারণ, নিয়ম মেনে চললে আর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়াবেটিকরাও বাকিদের মতোই স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারেন।
৫) অনেকেই মনে করেন, চিকিৎসক ইনসুলিন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মানেই রোগী মোটেও নিয়ম মেনে চলছেন না। বাস্তবে এ ধরণা সম্পূর্ণ ভুল! কারণ, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে (T2D) রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। ফলে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও একটা সময়ের পর ইনসুলিন নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
কিডনিতে পাথর জমছে! কিভাবে বুঝবেন?
শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান, মূত্রজনিত কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সে খেয়াল রাখা কিংবা তলপেটে বা কোমরে একটানা ব্যথা থাকলে তা নিয়ে সতর্ক থাকা— কিডনির খেয়াল রাখা বলতে এইটুকুই। সাধারণত, কিডনির যত্নের বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু ভাবার অবকাশ রাখেন না অধিকাংশ মানুষ।
কিন্তু কিডনির নানা সমস্যা বিশেষ করে রেনাল স্টোনে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি রেনাল স্টোনের অন্যতম কারণ।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কিডনিতে পাথর ক’টি আছে এবং কোথায়, কেমন অবস্থায় রয়েছে এগুলির উপরই এই অসুখের উপসর্গ নির্ভর করে। পাথর নানা আকারের হয়। সাধারণত, পাথরের সংখ্যা কম ও আকার খুব ছোট হলে তা কোনো রকম উপসর্গ ছাড়াই শরীরে থেকে যেতে পারে। ওষুধের মাধ্যমে তা গলিয়ে দেয়া বা শরীরের বাইরে বার করে দেয়ার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু সংখ্যায় বেশি বা আকারে বড় হলে তা কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে বইকি। তখন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনও পড়ে।”
রেনাল স্টোনে তলপেট থেকে ব্যথা ছড়ায় কোমরেও।
কিডনিতে পাথর প্রতিরোধের উপায়
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, কিছু বিশেষ নিয়মকানুন মেনে চললে রেনাল স্টোনের সমস্যা এড়ানো যায়।
পানি তো তো খেতেই হবে, কিন্তু প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া কোনো স্বাস্থ্যকর লক্ষণ নয়। বরং শরীরের প্রয়োজন বুঝে, চাহিদা জেনে সেই অনুযায়ী পানি খান। এতে কিডনি ভালো খাকবে।
এমন কোনো ডায়েটের উপর নির্ভর করবেন না, যেখানে ক্যালশিয়ামের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার থাকে। অতিরিক্ত দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য গ্রহণে রেনাল স্টোনের সম্ভাবনা বাড়ে।
প্রায়ই কি মূত্রথলিতে বা প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়? তা হলে প্রথম থেকে সতর্ক হয়ে চিকিৎসা করান।
এ সব সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে রেনাল স্টোনের ভয় অনেকটা কমে। কিন্তু এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধলেও অনেকেই প্রথম অবস্থায় বুঝে উঠতে পারেন না। সাধারণত, কিডনির জটিলতার নানা উপসর্গই এই রোগের ক্ষেত্রেও লক্ষণ হিসাবে দেখা দেয়। দেখে নিন কোন কোন উপসর্গ দেখলে এই অসুখ নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।
কিডনিতে পাথরের উপসর্গ
অনেকেরই এই অসুখের হাত ধরে ঘন ঘন জ্বর আসে। তাপমাত্রা অল্প থাকলেও বার বার ঘুরেফিরে এমন জ্বর এলে সাবধান হোন।
মূত্রের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। যদি লালচে রঙের প্রস্রাব হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিডনির অন্যান্য জটিলতাতেও প্রস্রাবের রং লালচে হতে পারে।
কোমর থেকে তলপেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ব্যথা যে সকলের ক্ষেত্রে স্থায়ী হবে এমন নয়। তাই মাঝে মাঝে এমন ব্যথা হলেও সতর্ক হোন।
বমি হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। বমিভাবও থাকে অনেকের।
এ সব লক্ষণ দেখলে রেনাল স্টোন ও কিডনির যেকোনো জটিলতা বোঝার জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Leave a Reply