সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

শায়েস্তাগঞ্জে ভাঙ্গারির দোকানে অভিযান চোরাই মালামালসহ আটক ৩

নুর উদ্দিন সুমন, বার্তা সম্পাদক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০
  • ২৬০ বার পঠিত

নুর উদ্দিন সুমন : হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ভাঙ্গারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চলছে চোরাই মালের জমজমাট বাণিজ্য। অবৈধভাবে রাতের আঁধারে বিভিন্ন কোম্পানির মেশিনারির যন্ত্রাংশ, অটোরিকশা ছিনতাই, প্রাইভেটকার, বাড়ির পাশে থাকা পানির কলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি হয়। একটু সন্ধা হলেই ভাঙ্গারির দোকানগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাস দিয়ে কেটে টুকরা টুকরা করে অন্যসব সরঞ্জামের সাতে মিশিয়ে রাখা হয় এসব। ফলে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চোরাই লোহাজাত দ্রব্য বিক্রি হচ্ছে ভাঙ্গারি দোকানগুলোতে। এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ চোরকারবারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনে। গত দুইদিনে অভিযান চালিয়ে নছরতপুর ভাঙ্গারি দোকান মালিকসহ ৩জনকে গ্রেফতার করা করেছেন। গ্রেফতার কৃতরা হলেন, নছরতপুর ভাঙ্গারি দোকানের মালিক হবিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লুকড়া গ্রামের হাজ্বী সমসু মিয়ার ছেলে সাইদুল মিয়া (২৮) সুরাবই প্রকাশিত (কারামারা) গ্রামের তৌহিদ মিয়ার ছেলে শাহ আলম (২২)। জানা যায়, গত শুক্রবার থেকে ও শনিবার ভোর রাত পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি অজয় দেবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নছরতপুর ও ওলিপুর পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে চোরাই করা ১৩০ কেজি লোহা ও তামা ভাঙ্গারির দোকানে ক্রয়বিক্রয়কালে সাইদুল ও শাহ আলমকে চোরাই মালামালসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেন। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে শনিবার রাতে নাছিমকে গ্রেফতার করা হয় । নাছিম(৩৫) সুরাবই গ্রামের মৃত উছমান মিয়ার ছেলে। এ তথ্য নিশ্চত করে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি অজয় দেব জানান, চক্রটি উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নছরতপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকানে চোরাই লোহাজাত দ্রব্য ক্রয়বিক্রয় করে আসছিল এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আটক আসামীদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ চক্রের যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ, মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল, মিরপুরসহ প্রত্যেক উপজেলায় গড়ে উঠেছে শতাধিক ভাঙ্গারি মালামাল কেনা-বেচার দোকান। এইসব দোকানির সহযোগিতায় এলাকা ভিত্তিক গড়ে উঠেছে একাধিক চোরের দল। এই চোরের দলগুলো বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্যালো যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক মোটর, তার, বৈদ্যুতিক ট্রান্স মিটার, দরজা-জানলার গ্রীল, টিউবওয়েল, টিন, অটোরিকশা, প্রাইভেটকারসহ যানবাহনের যন্ত্রাংশ চুরি করে দোকানিদের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে। বেশ কয়েকজন বাড়ির মালিকের সাথে আলাপে জানা গেছে, কিছু মাদকসেবক ও জোয়ারীরা বাড়ি থেকে যখন নেশা ও জোয়ার টাকা যোগাড় করতে পারে না, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোহা চুরি করে। আর চুরি করা মালামাল ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীরা বলেন, চুরির মাল ছাড়া প্রকৃত ভাঙ্গারি ব্যবসা করা খুবই কঠিন। আর সকলকেই ম্যানেজ করেই চলে এই ভাঙ্গারি ব্যবসা। তারা আরও জানান, একেকজন ব্যবসায়ীর ৪/৫ জন ফেরি ব্যবসায়ী থাকেন। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কিছু নিত্যপণ্যের বিনিময়ে ব্যবহার অনুপযোগী কিংবা পরিত্যক্ত জিনিষপত্র সংগ্রহ করে আমাদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ , বাড়ি-ঘর ও বিভিন্ন কারখানা সংস্কার কাজের জন্য রাখা রড, তারসহ লোহা দ্রব্যাদি ও চুরি হয়ে যায়। এই জেলার বিভিন্ন ফুটপাতে ও মহাসড়কে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ভাঙ্গারি ব্যবসা। যার কারণে বাড়ছে চুরির সংখ্যা। তাই এসব দোকানে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী আনা উচিত বলে মনে করেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com