ডেস্ক রিপোর্ট: একাদশ সংসদ নিবার্চনের আগে যেসব রাজনীতিকের সঙ্গে আওয়ামী সংলাপ করেছিলেন তাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে অংশ নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া শেখ হাসিনা শনিবার রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান ও চা-চক্রের আয়োজন করেন। ভোটের আগে গত ১ নভেম্বর সংলাপ শুরু করে প্রধানমন্ত্রী শতাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই সংলাপে অংশ নেয়া সব দলের নেতাদের চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো গণভবনে যায়নি। তারা যে চা-চক্রে অংশ নিচ্ছে না তা শুক্রবারই জানিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ির দক্ষিণের সবুজ লনের এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও জাতীয় পাটির্, জাসদ, ওয়াকার্সর্ পাটির্, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতন্ত্রী পাটির্, সাম্যবাদী দলসহ ১৪ দলীয় জোট, মহাজোট ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শীষর্ নেতারা উপস্থিত হন। অতিথিদের বসার জন্য গণভবনের সবুজ লনে চেয়ার, টেবিল, মোড়া, মাদুরের ব্যবস্থা করা হয়। নানা খাবারে আপ্যায়িত করা হয় অতিথিদের। ফুচকা, চটপটির জন্য আলাদা আলাদা টেবিল রাখা হয়। পিঠার টেবিলে ছিল পাটিসাপটা, ভাপা, চিতই, পুলি প্রভৃতি। ছিল বিভিন্ন ধরনের কাবাব, নানরুটি, পরোটা। এছাড়া নানা ধরনের শরবত, কফিও ছিল। প্রধানমন্ত্রী গণভবনের মাঠে আসেন বিকাল ৪টার পরে। তিনি লনে ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওবায়দুল কাদের, ফারুক খান, আব্দুল মতিন খসরু, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাছান মাহমুদ, শ ম রেজাউল করিম, ইকবালুর রহিম, দেলোয়ার হোসেন, আবদুস সোবহান গোলাপ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বাহাউদ্দিন নাসিম, এনামুল হক শামীম ও বিপ্লব বড়ুয়া। জাতীয় পাটির্র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ। জাতীয় পাটির্র (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাসদের (আম্বিয়া) মঈনুদ্দিন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধান, ওয়াকার্সর্ পাটির্র রাশেদ খান মেনন, ফজলে হোসেন বাদশাও ছিলেন। এছাড়া অংশ নেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম কদরুদ্দোজা চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মান্নান, মাহি বি চৌধুরী ও শমশের মবিন চৌধুরী। ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মিজবাহুর রহমান চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া, বিএনএফ সভাপতি নাজমুল হুদা প্রমুখ উপস্থিত হন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও কাযার্লয়ের ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রাও চা-চক্রে অংশ নেন। পরে যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য বা এ ধরনের কিছুই হয়নি। শুধু চা-চক্র হয়েছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী) সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে বি চৌধুরী বলেন, নিবার্চনের আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসেছিলেন, নিবার্চনের পর আবার বসলেন। চা খাওয়া ও কুশল বিনিময়ই মূল বিষয় ছিল। গণভবন থেকে বের হয়ে জাতীয় পাটির্র কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাদের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাদের সঙ্গে সম্পকর্ ঝালাই করে নেয়া এবং যাদের সঙ্গে কম পরিচয় ছিল, তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়াই চা-চক্রের মূল বিষয় ছিল। সবার সঙ্গে সুসম্পকর্ গড়ে তোলাই চা-চক্রের উদ্দেশ্য ছিল। রাজনৈতিক নেতারা খোলামেলা মনে আলোচনা করেছেন। আমি মনে করি এটা ভবিষ্যতে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘এটা শুধু চা-চক্র। ইনফরমাল ওয়েতে আমরা একজন আরেকজনের সঙ্গে মিশেছি। সৌহাদের্্যর যে বন্ধন সেটা আরও দৃঢ় হয়েছে।’ জাতীয় পাটির্র মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, যেখানে তার নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না, এ রকম কোনো একটি জায়গায়। ওই দিনের দাওয়াতে আজকে যারা ছিলেন সবাই থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত কবুল করেছেন।’
Leave a Reply