হবিগঞ্জ সংবাদদাতা ॥ ময়লা-আবর্জনার স্তুপ, মেঝেতে পড়ে থাকা খাবারের উচ্ছ্বিষ্ট। গাইনী ও শিশু ওয়ার্ডের সামনে মুখে রুমাল দিয়ে যাওয়া। রোগীদের বেডে বিড়ালের অবস্থান। এটাই ছিল হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের চিত্র। আয়া এবং এমএলএসএস থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালের প্রতিটি টয়লেট ছিল ব্যবহারের অনুপযোগী প্রায়। তবে এবার রোগী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন আশা। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিঠুন রায় বদলে দিয়েছেন হাসপাতালের চিত্র। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি হবিগঞ্জ পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যোগ দেন এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। বিকেলে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় পরিস্কার এবং ঝকঝকে অবস্থায় হাসপাতালটি। রোগী ও তাদের স্বজনরা স্বাগত জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে।
এ ব্যাপারে একজন রোগীর স্বজন জানান, তিনি ১৫ দিন ধরে তার মেয়েকে নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি। ময়লা-আবর্জনা এবং দুর্গন্ধের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তারা। তার ধারণা শিশু ওয়ার্ডটি অপরিস্কার থাকার কারণে রোগীরা কম সময়ে সুস্থ হয়ে উঠে না। শুক্রবার হাসপাতাল পরিস্কার হওয়ার পর তিনি অনেকটা আশ্যস্ত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জের এক নবজাতকের মা মিতু আক্তার জানান, প্রায় ১০ দিন পূর্বে তার নবজাগতক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। ৫ দিন হাসপাতাল থাকার ডায়রিয়া কমে গেলেও তার জ্বর কমছিল না। পরবর্তীতে অন্য এক চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হলে তাকে জানানো হয়- অপরিস্কার পরিবেশে থাকার কারণে ছেলেটির পুনরায় নিউমোনিয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন- হাসপাতালটি প্রতিদিন পরিস্কার করা দরকার। ডাঃ মিঠুন রায়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান মিতু।
এ ব্যাপারে ডাঃ মিটুন রায় বলেন, হাসপাতালের মতো জায়গা সবসময়ই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত। আগামী দিনগুলোতে আমরা সরকারি দায়িত্বের পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে একবার অতিরিক্ত কাজ করে হাসপাতালটিকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখব। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে পৌরসভার পক্ষ থেকে হাসপাতালের অঙ্গিনা থেকে ময়লা আবর্জনা সড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে হাসপাতাল ছাড়াও হবিগঞ্জ পৌরসভা এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অংশ নেয়ায় তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানান ডাঃ মিঠুন।
Leave a Reply