নুর উদ্দিন সুমন : বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো চুনারুঘাট উপজেলায় আজ পালিত হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে আজ ৮ আগস্ট শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ এর সভাপতিত্বে অালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । এতে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফুর রহমান মহালদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলটন চন্দ্র পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জালাল উদ্দিন সরকার, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সামছুল হক, সমবায় কর্মকর্তা এমরানুল হক, ইন্সট্রাক্টর খায়ের উদ্দিন মোল্লা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইয়াসমিন, তথ্য সেবা কর্মকর্তা সোনালি রায়, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান মাসুদসহ উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতির সমাপনীর বক্তব্যে নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাঙালি জাতির ইতিহাসে অনন্য মহিয়সী নারী। একই সাথে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ স্ত্রী ও স্নেহময়ী মা। এর পাশাপাশি তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর। দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জাতির পিতার সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখতেন। জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে এই মহিয়সী নারী বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে তাঁকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছেন। আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্বরনীয় হয়ে থাকবে।
আলোচনা সভা শেষে উপজেলা প্রশাশনের উদ্যোগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় অনুষ্ঠান বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনের জাতীয় কর্মসূচী প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে বক্তব্য রাখেন। জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দুঃস্থ নারীদের সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুযায়ী ৬৪ জেলায় তিন হাজার দুইশত সেলাই মেশিন ও তেরশ জন দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট ছাব্বিশ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। একই সাথে গোপালগঞ্জ জেলার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একশত ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য এই মহীয়সী নারী আজকের এইদিনে ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব কেবল একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী। পরে এই দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন এর আয়োজনে শতাধিক বৃক্ষরোপণ করা হয়।
Leave a Reply