জুবায়ের আহমেদ, বাহুবল:হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার চলিতাতলা-বক্তারপুর রাস্তার পূন:পাকাকরণ (পিচ করা) এর জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ৪কি:মি: রাস্তার জন্য প্রায় কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয় সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম ঈদের ২দিন পূর্বে চলিতাতলা বাজারের নিকট এসে সমাপ্ত হয়। কাজের মান এতই নিম্নমানের, যেন কোটি টাকা হজম করতেই দায়সারাভাবে কাজটি করতে হয়েছে। অতি হালকামানে পাথর কংক্রিট আর কেরোসিন মিশ্রিত পিচের প্রলেপ দেয়া হয়। এরই মাঝে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পিচকরার ২/৪দিনের মাথায় উঠে যাচ্ছে। যা এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের সেই সমালোচনাটি সরকারের ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছে মারাত্মকভাবে। রাস্তার পিচের করুণার দশার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে। এতে অনেকেই সরকারী কর্মকান্ডের সমালোচনা করছেন। আর এই সমালোচনাটি সরকারের উপর বর্তাচ্ছে উপজেলা এলজিইডির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণেই। কাজের যথাযথ তদারকি না করায় দুর্নীতির আলামত ফুটে উঠেছে। এবার সরকার কি করবে? কি শান্তনা দেবে জনগণকে? কোন ব্যবস্থা নেবেন কি দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে? রাস্তা কি পূন:মেরামত করে দেয়া হবে? এমন প্রশ্নই স্থানীয় জনগণের মুখে মুখে। উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ও অলুয়া গ্রামের বাসিন্দা এমএ মজিদ তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন-রাস্তা সংস্কারের ৩দিনের মাথায় পিচ উঠে যাওয়ার ঘটনাটি দেখে মনে হয় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং এলজিইডির প্রকৌশলীর যোগসাজসে এমনটা হয়েছে। এছাড়া কাজের এমন অবস্থা দেখে মনে হয়, বাহুবলে কোন জনপ্রতিনিধি নেই। কারণ এব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরও ভূমিকা রয়েছে। বেহাল রাস্তার অংশগুলো সিডিউল অনুযায়ী পুন:সংস্কার করতে হবে।অন্যতায় জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ ব্যাপারে ৩নং সাতকাপন ইউপির আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাঈদ আহমদ এক মন্তব্যে বলেন- উপজেলা প্রকৌশল অফিসের প্রধান কর্তাই এর দায়ভার নিতে হবে। কারণ সুযোগে দুর্নীতিবাজরা সুবিধা নেবেই। কর্তা ব্যক্তির তদারকি থাকলে এমনটা হতো না। অনতিবিলম্বে তা মেরামত করে দিতে হবে। অন্যতায় জনগণ এ নিয়ে রাস্তায় নামবে। এব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: আয়াত আলীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন- রাস্তার কাজটি যেভাবে করা হয়েছে আমি দেখেছি, তা খুবই খারাপ এবং দু:খজনক।আমি উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবকে অবগত করেছি। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নারায়ণ চন্দ্র পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-আমাকে এব্যাপারে স্থানীয় কয়েকজন বলেছে, আমি তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত করার পরামর্শ দিয়েছি। প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। রাস্তার অনিয়ম নিয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন- কাজ সঠিক হয়নি।আমি ঠিকাদারকে বলেছি ভালভাবে করার জন্য। ঠিকাদার আমার কথা না শোনে আমাকে মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়।
সরেজমিনে স্থানীয় পথচারী লোকজনের সাথে আলাপ করলে তারা “টেকা মাইরা খাওয়ার ধান্ধা” বলেই মন্তব্য করেন।এব্যাপারে ঠিকাদারের ম্যানেজার মিজু আহমেদ এর সাথে মোবাঃ ফোনে কথা হলে তিনি বলে, বিষয়টি শুনেছি আমরা আজ কালের মধ্যেই সরেজমিনে গিয়ে দেখে আসবো, এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলফাজ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলে, রাস্তার কাজটি সরাসরি জেলা অফিসের তত্বাবধানে হচ্ছে, তার পরও আমরা আমাদের সাধ্যমত তদারকি করার চেষ্টা করছি,রাস্তার যে যে স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে মেরামত করার ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
Leave a Reply