শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা. জাবের

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০
  • ২৯১ বার পঠিত

কাজী মাহমুদুল হক সুজনঃ- হবিগঞ্জ থেকে।।হবিগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে মোবাইল কল খবর পেয়ে সকাল থেকে রাত অবধি মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডা. সৈয়দ এম আবরার জাবের।

প্রতিদিন একটি অটোরিকশায় চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পাড়া মহল্লায়। রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেন তিনি। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যান। কারো ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে দেন। কারো রক্তচাপ মেপে দেন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দিয়ে বাসায় ফিরেন।

ডা. সৈয়দ এম আবরার জাবের হবিগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চেম্বার করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর এখন মাত্র ২ ঘণ্টা চেম্বারে বসেন তিনি। এছাড়া পাড়া প্রতিবেশিদের জন্য তার বাসার সামনে একটি রুমে চিকিৎসা পরামর্শ দেন।

ডা. সৈয়দ এম আবরার জাবের জানান, সকাল ১১টায় একটি অটোরিকশার সামনে ‘ডাক্তার’ লিখা স্টিকার লাগিয়ে, একটা বড় হেক্সিসল, ৩০টি মাস্ক, ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, বিপি মেশিন, স্টেথোস্কোপ, গ্লাভস নিয়ে বের হন তিনি। হেক্সিসল নিয়েছেন নিজের, রোগীর হাত, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি পরিষ্কারের জন্য।কলে নির্ধারিত রোগীদের বাড়ির সামনে যাওয়ার পর আশপাশের আরও অনেকেই এসেছেন সেবা নেওয়ার জন্য। তাদেরকেও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন তিনি।

শুধু তাই নয়, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য চেম্বারে রোগী দেখার ফিতে এনেছেন বৈচিত্র্য। তার চেম্বারে করোনাকালীন ফি নির্ধারন করেছেন ২ কেজি চাল, ১ কেজি আলু বা অন্য একটা সবজি, ১টি সাবান, ১ প্যাকেট গুড়ো সাবান। এই সামগ্রীগুলো তার নিজের জন্য নয়, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যে নিম্ন আয়ের মানুষজন সংকটে আছেন তাদের দেওয়া হবে এই সামগ্রী।

এছাড়াও তিনি WHO এবং জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে Covid 19 বিষয়ে ট্রেনিং সম্পন্ন করেন। স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তার হিসেবে হটলাইনে ( ৩৩৩, ১৬২৬৩) সেবা দিচ্ছেন। ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন এলাকার রোগীদের সেবা দিচ্ছেন হটলাইনে।

ডা. সৈয়দ এম আবরার জাবের বলেন, নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই অটোরিকশা করে সেবা দিতে বের হয়েছি। যাদের সেবা দিয়েছি তাদের কারোরই সর্দি জ্বর ছিল না। সবারই ডায়াবেটিস, প্রেসারসহ অন্যান্য রোগ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারী নিষেধাজ্ঞা ও আতঙ্কের কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালও বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি হাসপাতালে পিপিই’র অপ্রতুলতায় চিকিৎসকদের মাঝেও আতংক কাজ করে। এই মুহূর্তে সাধারণ চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক মানুষ। তাই অন্তত যে রোগীরা আমাকে স্মরণ করছেন তাদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
উনার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পৈল হাবিলীর সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ সাহেবের ছেলে। এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব সৈয়দ আহমদুল হক সাহেবের ভাতিজা।
এ ব্যাপারে ডাঃ জাবেরের চাচাত্ব ভাই ও পৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন এ দুর্দিনে উনি যে কাজটি করছেন সত্যিই প্রশংসিত। মানুষের জন্য কিছু করা মানুষ হিসাবে আমাদের দায়িত্ব। তিনি এভাবে যার যার অবস্তান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com