শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন

নবীগঞ্জে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৯৬ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ নবীগঞ্জে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করেছেন এক কলেজ ছাত্রী। অপর দিকে কৌশলে আত্মগোপন করেছে প্রেমিক। স্ত্রী হিসেবে ওই মেয়েকে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানায় তার অভিভাবকরাও। এ অবস্থায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দিলে বাড়িতে চলে যায় ছাত্রী। ঘটনাটি নিয়ে দিনারপুর এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম-বাঔয়ানি চা বাগানের বাসিন্দা জীবন কৃষ্ণ গোয়ালার কন্যা আউশকান্দি র.প স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর জনৈকা ছাত্রীর সাথে কলেজের লেখা পড়ার সুবাধে পরিচয় হয় দেবপাড়া ইউনিয়নের বালিদ্বারা নারাইন্দি গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র করের ছেলে রনি চন্দ্র করের। পরিচয় থেকে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরে তা দিনের পর দিন হয়ে উঠে গভীর থেকে গভীরতর। এর পরের ঘটনা যেন সিনেমার কাহিনীর মতো।

এ দিকে গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ওই ছাত্রী তার মা-বাবা ও এক মামাকে নিয়ে প্রেমিক রনির বাড়িতে এসে স্ত্রী’র স্বীকৃতির দাবীতে অনশন করে। তবে এর আগেই কৌশলে আত্মগোপন করে প্রেমিক রনি। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত হন ওই বাড়িতে। এ সময় ওই ছাত্রী জানায়-‘প্রায় ১ বছর আগে কলেজে পরিচয় হয় রনির সাথে। এক পর্যায়ে উভয়ের মন দেয়া নেয়া হয়, এমনকি সর্ম্পকটি অনেক গভীর হয়ে উঠে। সম্প্রতি প্রেমিক রনি মোবাইল ফোনে জানায়, তার সাথে দেখা করার জন্য। পরে দেখা হয় প্রেমিক জুটির। এসময় রনি বলে নবীগঞ্জ শহরতলীতে তাদের এক আত্মীয়র বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য। প্রেমিকের এমন আবদারে আর বাধা দেয়নি প্রেমিকা। সেও প্রস্তুত হয়ে চলে যায় প্রেমিকের সাথে। প্রেমিক রনি নিয়ে যায় নবীগঞ্জ শহরস্থ তার মাসির বাসায়। সেখানে গিয়ে রনি ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়। তার পরিবার এ বিয়ে মেনে নেবে কিনা প্রেমিকার এমন প্রশ্নে রনি বলে-‘তোমাকে আমি বিয়ে করবো, আমি খাওয়াবো, পরিবার মানলেই কি আর না মানলেই কি?।’ এমন কথা বলে বাহিরে বেড়িয়ে যায় রনি। নিয়ে আসে সিঁদুর শঙ্খ। অনেকটা ফিল্মি কায়দায় যেন রনি তার মাসির সামনে প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর পড়িয়ে দেয়। উভয়ে হয় বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ, হয় মধুর চন্দ্রমা আর ওই বাসাতেই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে হয় তাদের রাত্রি যাপন।’ প্রেমিক রনির বাড়িতে এসে এলাকার লোকজনের কাছে এমটাই বর্ণনা দেয় কথিত প্রেমিকা স্ত্রী। সে আরো জানায়- ‘সিঁদুর পড়িয়ে তাকে বিয়ে করার পর খবর পেয়ে রনির কাকা শ্রীভাষ ও বিশুসহ কয়েকজন লোক যায় ওই বাসায়। সেখানে গিয়ে তারা কৌশলে কোর্ট ম্যারিজ করাতে হবে বলে প্রেমিক জুটিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আসেন। পানিউম্দা বাজারে গিয়ে অনেকেই গাড়ী থেকে নেমে যান পরে রনি ও একজন লোক মেয়েকে নিয়ে যায় চা বাগানের ভিতরে তাদের বাসায়। বাসায় গিয়ে মেয়ের মায়ের সঙ্গে কথা বলে মাকে বুঝিয়ে বলেন- ‘যেহেতু ছেলে-মেয়ে একে অন্যকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে তাই ৭২ ঘন্টার ভিতরে আনুষ্ঠানিকভাবে কন্যাকে নেয়া হবে।’ এ কথা বলে চলে আসেন তারা। এর পর থেকেই রনির মোবাইল ফোনে বার বার কল দিয়ে বন্ধ পায় কথিত প্রেমিকা স্ত্রী। এরপর থেকে ভেঙে পড়ে সে, তার মনে দেখা দেয় হতাশা। কোন উপায় না পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে মেয়ে মা-বাবা ও মামাকে নিয়ে ছুটে আসে রনির বাড়িতে। এসময় কৌশলে আত্মগোপন করে রনি। খবর পেয়ে রনির বাড়িতে আসেন দেবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোহিত চৌধুরী, দেবপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান রুকুদসহ এলাকার অনেক লোকজন। মেয়ের মুখ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনার পর রনির অভিভাবকদের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে রনির স্ত্রী হিসেবে ওই মেয়েকে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানায় তার অভিভাবকরাও। এতে চরম বিপাকে পড়ে মেয়ে ও তার পরিবার। পরে ৪ দিন পর পানিউমদা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশে বসে ঘটনার সুষ্ট সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিলে মেয়েকে জিম্মায় নিয়ে যান অভিভাবকরা। এ ঘটনাটি লোকমুখে প্রচার হলে এলাকায় শুরু হয় রসালো আলোচনা-সমালোচনা। রাতে রনির বাড়িতে স্ত্রী’র স্বীকৃতির দাবীতে প্রেমিকার অনশনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোহিত চৌধুরী।

এ ব্যাপারে জানতে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ‘থানায় এমন কোন অভিযোগ করেনি কেউ, ঘটনাটি সর্ম্পকে তিনি অবগত নয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com