নিজস্ব প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবলে পাহাড় কেটে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করছেন হবিগঞ্জ জেলা তাতীলীগের সভাপতি ও বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী। অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযানেও যাচ্ছেনা প্রশাসন। যদিও অন্যান্য জায়গায় ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু পুড়াতে পারেননি তাতীলীগ সভাপতির ড্রেজার মেশিনগুলি।
এদিকে, পাহাড় কাটায় পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি রাস্তাঘাটের হয়েছে বেহাল দশা। মেয়াদোত্তীর্ণ একটি আমোক্তারনামা প্রদর্শন করে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে তিনি বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বাহুবল উপজেলার শশ্মানছড়ার প্রায় পাঁচ একর জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করছেন মুদ্দত আলী। সরকারের কাছ থেকে লিজ না নিয়ে শুধু প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করছেন। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রাক দিয়ে মাটি ও বালু বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়।
চা বাগানের শ্রমিক সুরেশ জানান, বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার সব রাস্তাঘাট এখন জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে চা পাতা নিয়ে নারী শ্রমিকদের আসা-যাওয়া করতে ভুগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় তাদের সন্তানরা স্কুল-কলেজে আসতে পারছে না। কিন্তু মুদ্দত চেয়ারম্যানের ভয়ে তারা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
একই বাগানের রবি দাস বলেন, ‘প্রতিদিন শতশত ট্রাক দিয়ে বালু নেওয়ার ফলে আমাদের রাস্তাঘাট জমিতে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে চলাচলের কোনও অবস্থা নেই। রাস্তা নয় যেন জমির ওপর দিয়ে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই আমাদের রাস্তাঘাট ধ্বংস হচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই।’
জেলা প্রশাসকের বরাবর করা অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম জয়পুর গ্রামের মরহুম ফজলুল হক বাদল জীবদ্দশায় বাহুবলের শশ্মানছড়া নামক বালু মহালটি সরকারের নিকট থেকে ইজারাপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে সরকারের সাথে মহাল নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় তিনি মহামান্য হাইকোর্টে রীট করেন। এবং ১৯৬৩/৬ নং রীটের আদেশবলে প্রতিবছর রয়েলটি জমা দেয়ার মাধ্যমে বালু উত্তোলনের অনুমতি পান।
পরবর্তীতে ব্যবসায়ীক জামেলার কারণে ওই মহালটি উপজেলার ২নং পুটিজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী পরিচালিত প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনার বাংলা এন্টারপ্রাইজকে ২০১১ সনের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সনের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বালু মহালটি পরিচালনার জন্য নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন।
ফজলুল হক বাদল মৃত্যুবরণ করায় তার ওয়ারিশান নাবালক ২ ছেলে, ১ মেয়ে ও স্ত্রী ভোগদখলকার হন। এদিকে চুক্তিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণের ৬ বছর অতিবাহিত হলেও মুদ্দত আলী চুক্তি নবায়ন না করেই মহালসহ এলাকার বালু, মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছেন।
আর ফজলুল হক বাদলের মেসার্স মৈত্রী এন্টারপ্রাইজের নামীয় রশিদ প্রদান করে উত্তোলিত বালু বিক্রি করে চলেছেন।
ফজলুল হক বাদলের স্ত্রী নাদিরা খানম অভিযোগে বলেন, চেয়ারম্যান মুদ্দত আলীর অবৈধ বালূ উত্তোলন ও মাটি কাটার কারণে কোন রূপ ক্ষতি সাধিত হলে এর দায়ভার মুদ্দত আলীকেই বহন করতে হবে।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হক বলেন, বালু তোলা বন্ধ রয়েছে, এখন মহাসড়কের পাশে রাখা বালুর উপর অভিযান চলছে
Leave a Reply