শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন

চুনারুঘাটে মৃত্যুর ৩ মাস পর কবর থেকে শিশুর লাশ উত্তোলন

নুর উদ্দিন সুমন
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ৩০৪ বার পঠিত

নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মৃত্যুর ৩ মাস পাঁচদিন পর উপজেলার পৌরসভার বাগবাড়ি মায়িশা জান্নাত আড়াই বছরের এক শিশুর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর ) সকাল ১০ টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। নিহত মায়িশা জান্নাতের পিতা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মোছাব্বির দায়েরকৃত হত্যা মামলায় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে ওই লাশ উত্তোলন করা হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৮ জুন বিকাল ২টার দিকে পৌরসভার বাগবাড়ি নানার বাড়ির পুকুড়ে পড়ে মৃত্যু হয় শিশুর। কিন্তু মায়িশা জান্নাতের পিতা আব্দুল মোছাব্বির আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন । বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে হবিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সজিব কান্তি বড়ুয়ার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ শরিফ উদ্দিন এর উপস্থিতিতে মাটি কুড়ে মৃত মায়িশার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ শরিফ উদ্দিন জানান, বাদী মামলা দায়ের পর আদালতের নির্দেশে লাশটি উত্তোলন করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করতে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়। পিএম রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এদিকে লাশ উত্তোলনের খবর পেয়ে শতশত জনতা ভিড় জমায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিল মোঃ তাজুল ইসলাম কাজল ,সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর মাসকুরা বেগম প্রমুখ। তবে মৃত মায়িশার মা সেলিনা আক্তার জানান বিগত ২০১৪ সালের মিরাশী ইউনিয়নের অন্তগত পাকুড়িযা গ্রামের হাজ্বী আব্দুর রশিদের ছেলে আঃ মোছাব্বিরের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের কিছুদিনপর হইতেই মোছাব্বির যৌতুক ও বিভিন্ন বিষয় নিয়া শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করত। নির্যাতনের বিষয় নিয়ে স্থানীয় মেয়র ও পৌর কাউন্সিলরসহ বেশ কয়েকবার সালিশ বিচার করেন। শালিশে অন্যায় অত্যাচার করবেনা মর্মে মৌখিক ভাবে অঙ্গিকার করলেও পুনরায় নির্যাতনের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাদের কুল জোরে ২টিসন্তান জন্ম গ্রহন করে । সন্তানদের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করে সংসার করে আসছেন গৃহবধু সেলিনা। অবশেষে পাষন্ড স্বামীর অত্যাচার সহ্য কররেত না পেরে নিরোপায় হয়ে সেলিনা পিত্রালয়ে চলে আসেন। দারিদ্র অসহায় মুনছব উল্লাহ আদরের নাতী নাতনীর ও মেয়ের অভাব অনটনের মাঝেও ভরণ পোষন করে আসছেন । সেলিনা আরও জানায়, চলিত বছরের ৮জুন দুপুরে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকায় অবুঝ সন্তান মায়িশা বসত বাড়ির পশ্চিম দিকে পুকুড়ে পড়ে মারা যায়। মারা যাওয়ার পর স্বামীকে সংবাদ দিলে স্বামী মোছাব্বির সন্তাকে দেখতে আসেনি। স্বামীর অপেক্ষা করে বিকেলে ধর্মীয় মোতাবেক পিত্রালয়ের স্থানীয় কবর স্থানে লাশ দাফন করেন। কিন্তু যৌতুক লোভী স্বামী আমাকে গায়েল করতে হয়রানি মুলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে পাষন্ড সামীকে ধিক্কার জানান অনেকেই। এলাকাবাসী জানান পুকুড়ের পানিতে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাকে হয়রানী মুলক মামলা করেছে যৌতুক লোভী স্বামী এহেন ঘটনায় এলাকার জনসাধারনের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। ময়না তদন্ত শেষে আজ সন্ধ্যায় আবার পুনরায় ওই কবরস্থানে শিশু মায়িশার লাশ দাফন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com