ডেস্ক নিউজঃ সিলেট নগরীতে মাইকিং করা হয়েছে-‘বিশাল আকারের বাঘ মাছ, বিশাল আকারের বাঘ মাছ বলে। আর এই মাছটি রাখা হয়েছে নগরীর বৃহৎ মাছের বাজার লালবাজারে। আগে আসলে আগে পাবেন, পরে আসলে পস্তাবেন।’
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় লালবাজারে গিয়ে দেখা যায়, দেখতে বাঘের মতো ডোরা কাটা বাঘাইড় মাছটি প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় বাঘ মাছ নামে পরিচিত সুস্বাদু মাছটি মানুষ ভিড় করে দেখছেন। কেউ আবার ছবিও তুলছেন। আনোয়ার মিয়া নামে এক মাছ ব্যবসায়ী খাতায় ক্রেতাদের নাম লিখছেন। কে কত কেজি নিবেন তাও লিখছেন। আনোয়ার মিয়া জানান, প্রদর্শনীর জন্য আর ক্রেতাদের নাম তালিকাভুক্তির জন্য মাছটি বাজারে রাখা হয়েছে। রাতে ফ্রিজে রাখা হবে, আর কাল (আজ বৃহস্পতিবার) সকালে মাছটি কেটে কেজি হিসেবে বিক্রি করা হবে।
আনোয়ার মিয়া জানান, মাছটি জকিগঞ্জের একদল জেলে কুশিয়ারা নদী থেকে ধরেছেন। প্রায় সাড়ে ৩মণ ওজনের মাছ জেলেরা সিলেটের কাজির বাজার মাছের আড়তে নিয়ে আসলে তারা ৫জন মিলে মাছটি নিলামে ক্রয় করেন। তারা লালবাজারে এই মাছ কেটে কেজি প্রতি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করে বিক্রি করবেন। তিনি ছাড়াও অপর চারজন হাজি মানিক মিয়া, মখরিছ মিয়া, সাবু মিয়া ও পাপ্পু হোসেন মাছের পাশে বসে আগন্তুকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন।
ষাটোর্ধ্ব হাজি মানিক মিয়া জানান, মাঝেমধ্যে বাঘ মাছ বাজারে উঠে। কিন্তু এই মাছের মতো বিশাল আকারের মাছ গত ১৫ বছরের মধ্যে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে এক সময় এই বাঘ মাছ প্রচুর পরিমাণ ধরা পড়ত। এসব মাছ আকারে অনেক বড় হতো। কিন্তু ১৫ থেকে ২০ বছর এই মাছ দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে জেলেরা ধরে বাজারে তুলে কিন্তু আকারে ছোট থাকে। সিলেটের মতো দেশের অন্য এলাকায় এই মাছ পাওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঘ মাছের একটি কাটা থাকে। কাটা থেকে মাছ আলাদা করলে হলুদ রং বের হয়। দেখতে খাসির মাংসের মতো মনে হবে। তিনি বলেন, বাঘ মাছ ধরার জন্য আলাদা জাল আছে। সচরাচর জাল দিয়ে এই মাছ ধরা যায় না।
ইউকিপিডিয়ার তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে দু’প্রজাতির বাঘাইর বা বাঘার বা বাঘ মাছ আছে, এর একটি হলদেটে বাঘাইর(Yellow Goonch- Bagarius bagarius), অপরটি সবুজাভ বাঘাইর(Green Goonch- Bagarius yarrelli)। দু’প্রজাতিকেই আই ইউ সি এন বর্তমানে ‘প্রায় আশঙ্কাযুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উভয় প্রজাতিই ‘মহা বিপন্ন।
সৌজন্যেঃ সিলেটের ডাক
Leave a Reply