স্টাফ রিপোর্টার ॥ অতিবর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে চুনারুঘাটের পাহাড়ী ও চা বাগান এলাকার টিলাসমূহ ভেঙ্গে পড়ছে। বৈধ-অবৈধভাবে একশ্রেণীর বালি ও মাটি উত্তোলনকারী চক্র এতে উৎফুনল্ল হয়ে উঠছে। পাহাড় টিলা কেটে ছড়া ও নদী থেকে বালি উত্তোলনের ফলে বর্ষার শুরুতেই পাহাড় এবং চা বাগানের টিলাসমূহ ধ্বসে পড়ছে। পাশাপাশি সড়ক, মহ াসড়ক ও আন্তমহাসড়কের অনেক স্থানে ব্রীজ ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় এন্তার রিপোর্ট প্রকাশ ও প্রচারিত হলেও প্রশাসন এসব বিষয়ে কোন প্রতিকার না নিয়ে নীরব নির্বিকার রয়েছে। সরকারী রাজস্ব আদায়ের নামে হবিগঞ্জের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষায় প্রশাসন নীরব নির্বিকার কেন তা সচেতন মহলের বোধগম্য নয়। পরিবেশ আন্দোলনকারী বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ ভিন্নধর্মী নানা রকম কর্মসূচী অব্যাহতভাবে পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসনের কেন টনক নড়ছে না তা ভাবার বিষয়। বৃটিশ প্রশাসন থেকে বর্তমান সিলেট বিভাগকে কোন বড় ধরণের শিল্প কারখানা গড়ে না তোলার অন্যতম কারণ ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সবুজ শ্যামলীমার সিলেট থেকে চা বনজসম্পদ আয়ের অন্যতম স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরিলক্ষিত হচ্ছে সেই সবুজ শ্যামলীমার সিলেটকে
মরুভূমিতে পরিণত করার হীন প্রক্রিয়া চলছে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, চা বাগানগুলোর শেডটি নিধনের অভিনব প্রক্রিয়া। চা বাগানের শেডটি নিলামের নামে চলছে নানা রকম প্রচেষ্টা। ওই অপ প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে। অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চা শিল্প এখন ধংসের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। অবশেষে চা বাগানসমূহের ছড়া থেকে বালি মাটি উত্তোলনের লীজ দিয়ে চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা এখন দিন দিন ধসে পড়ছে। এরই সাথে খোয়াই, করাঙ্গী, সুতাং নদী থেকে অর্ধেক ও অপরিকল্পিতভাবে বালি-মাটি উত্তোলন করে জনজীবনকে হুমকির মুখে টেলে দেয়া হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নেই। যখন যে রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তখনই এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রশাসনও হয়ে পড়ে অসহায়। সাম্প্রতিক সময়ে হবিগঞ্জের মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল এলাকার পাহাড়ী ও চা বাগান এলাকার চা বাগানের টিলাসমূহ ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে। ছড়া-নদী থেকে বালি উত্তোলনের মহোৎসব বন্ধ করা না গেলে পাহাড় ও টিলা ধস রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এক সময় হয়ত চা বাগানগুলো ক্রমশ ছোট হয়ে আসবে। চা বাগানের শেডটি নিধন প্রক্রিয়া ও বালি উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে সরকার তথা সংশ্লিষ্টদের ভাবতে হবে এখুনি এমন মন্তব্য সচেতন মহলের।
Leave a Reply