নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজার থেকে শতক পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ হওয়ার ১ মাসের মাথায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। অনেক স্থানে উঠে গেছে কার্পেটিং। বহুল প্রতিক্ষিত এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলেও অসাধু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের যোগসাজসে নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার করার ফলে রাস্তায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এসব অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল খ্যাত দিনারপুর এলাকার লোকজন পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য জনতার বাজার থেকে কাগাবালা সড়কই একমাত্র উপায়। এছাড়াও আথানগীরি, শতক, বড়ইতলা, লামরোহ, দেওপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন নবীগঞ্জ উপজেলা সদর, দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনারপুর কলেজ, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজ, দিনারপুর মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হলে গ্রাম থেকে বের হয়ে আসার এটাই একমাত্র রাস্তা। বিগত প্রায় ৫-৬ বছর ধরে রাস্তার বিভিনস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর থেকে এ রাস্তা সংস্কারের দাবী জানিয়ে আসছিল এলাকাবাসী। গত বছরের ২৮ এপ্রিল জনতার বাজার থেকে শতক পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের দাবীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করে দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এতে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তড়িৎ গতিতে আরএআরআইপি প্রজেক্টের অধীনে দেওপাড়া থেকে শতক পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের জন্য ১ কোটি ৯ লাখ ৫শত ২৭ টাকার টেন্ডার করা হয়। পরে কাজটি পায় হবিগঞ্জের গোলাম ফারুক নামে এক ঠিকাদার। তাঁর কাছ থেকে কাজটি কিনে নেন নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঠিকাদার রবিন্দ্র কুমার পাল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজটি করান ঠিকাদার রবিন্দ্র কুমার পাল।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরোও জানান, কাজ চলাকালীন সময় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী নিন্মমানের মালামাল ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ এবং কার্পেটিং করায় কয়েক ঘণ্টার মাথায় কার্পেটিং উঠে যায়। এতে প্রতিবাদ করেন এবং কাজ বন্ধ করে দেন এলাকাবাসী। পরে উক্ত কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী সাঈদুর রহমানকে বিষয়টি অবগত করা হয়। পরে তিনি ভালোভাবে কাজটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করেন। কিন্তু বিষয়টি আমলে নেননি এ কর্মকর্তা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সহকারী প্রকৌশলীসহ প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের মালামাল দিয়ে এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে।
এব্যাপারে জানতে রাস্তার ঠিকাদার রবিন্দ্র কুমার পালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক জানান, যদি কোনো অনিয়ম হয়ে তাকে অবশ্যই আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আগামী-১ বছরের ভিতরে যদি রাস্তায় কোনো ধরণের ভাঙ্গন বা কার্পেটিং উঠে যায় সেটা মেরামত করিয়ে দিবে ঠিকাদার।
Leave a Reply