নিজস্ব প্রতিনিধি।। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মুড়ারবন্দ দরগাহ শরিফের আড়াই কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিধ্বস্ত সড়কের নির্মাণকাজ করতে উন্নতমানের পাথর ও ১ নম্বর ইটের খোয়ার পরিবর্তে নিম্নমানের পাথর, খোয়া মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই সড়কের প্রায় ৪০ ভাগ কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
জানা যায়, হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ দরপত্রের মাধ্যমে ছয় কোটি ২৯ লাখ টাকার কাজ পায় স্পেকটা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড-ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া কাজটি এ বছরের ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে ১২ ইঞ্চি বালুর পরিবর্তে ছয় ইঞ্চি বালু ফেলে তাতে ছয় ইঞ্চি খোয়ার পরিবর্তে মাত্র তিন ইঞ্চি খোয়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সড়কের দু’পাশে তিন ফুট মাটি দিয়ে প্রশস্ত করার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। পুরো রাস্তা ১৮ ফুট প্রশস্ত হওয়ার কথা থাকলেও করা হয়েছে মাত্র ১৫ ফুট। এ ছাড়া সড়কের নষ্ট হয়ে যাওয়া পুরনো কার্পেট না তুলে তার ওপর দিয়েই দায়সারা কাজ করা হচ্ছে। এখন বৃষ্টির ফলে পুরো রাস্তার বালু সরে গিয়ে পাথর ওপরে উঠে গেছে। ফলে যান চলাচল তো দূরের কথা, মানুষ চলাচলেও কষ্ট হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকটা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড-ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ম্যানেজার এআইএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নির্মাণকাজ প্রসঙ্গে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। তবে নির্মাণকাজে কিছুটা ত্রুটি হয়েছে, তা আমরা ঠিক কওে নেব। এখন কাজ বন্ধ কেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। অচিরেই আবার কাজ শুরু করব।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ শায়েস্তাগঞ্জের উপ-প্রকৌশলী মাসুম সিদ্দিকী জানান, ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কের দু’পাশের মাটি ধসে গেছে। নিম্নমানের খোয়া, পাথর, বালি ব্যবহারের সত্যতা স্বীকার করে তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ঠিকাদারকে দিয়ে নতুন করে কাজ করিয়ে নেওয়া হবে।
এদিকে, জনগণের ব্যাপক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল কাদির লস্কর, ইউএনও মঈন উদ্দিন ইকবাল, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সরেজমিনে সড়ক পরিদর্শন করেন। তারা অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিক কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে সড়কের ৪০ ভাগ সমাপ্ত কাজের বিলের জন্য ঠিকাদার সংশ্নিষ্ট দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
Leave a Reply