নুর উদ্দিন সুমন।। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, গ্রামের ঐতিহ্য ফেরাতে হাডুডু খেলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। খেলা মানুষের মন ও দেশ স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ক্রিকেট, ফুটবলের মতো প্রত্যেক এলাকায় কাবাডি টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হলে কাবাডি তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। এসব খেলার জায়গায় স্থান দখল করেছে ফেইজ বুক, কেরাম, ক্রিকেট, টিভি ও কম্পিউটার গেমস। আমাদের এসব দেশীয় খেলাগুলো ধরে রাখতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। হালে কাবাডি হিসাবে খেলাটির নামকরণ হলেও গ্রামাঞ্চলে হাডুডু নামেই এটি পরিচিত সর্বমহলে। হাডুডু বা কাবাডি কেবল আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাই নয় বরং পুরো উপমহাদেশেরই একটি জনপ্রিয় খেলা। বর্তমানে এই খেলাটিকে সাফ গেমসেও যোগ করা হয়েছে।ছোট ছেলে থেকে শুরু করে কিশোররা ও বড়রাও এই খেলা খেলতে পারে।হাডুডু আমাদের জাতীয় খেলা।গ্রামের খেলাগুলোর মধ্যে হা-ডু-ডু, সবচেয়ে জনপ্রিয়। এসব খেলা চলাকালে মানুষের ঢল নামতো।প্রায় বিলুপ্তির পথে জাতীয় এই খেলাকে ঘিরে তৈরি হয় উৎসব মুখর পরিবেশ। নারী পুরুষ ও শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সের লোক সম্মিলিত ভাবে এই খেলা উপভোগ করেন। কিন্তু এখন গ্রামের খোলা মাঠে এসব খেলা শুধুই স্মৃতি। দিন দিন এই খেলাটি হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে হাডুডু খেলাকে ধরে রাখতে হবে।গ্রামীণ খেলা আমাদের আদি সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এসব খেলাধূলা এক সময় আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করতো। কিন্তু কালক্রমে এই খেলার কদর হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে গ্রামীণ খেলাগুলো বিলুপ্ত হতে হতে এর অস্তিত্বের শেষ সীমায় দাঁড়িয়েছে। খোদ অজপাড়াগাঁয়েও সবচেয়ে বেশি প্রচলিত হাডুডু বা কাবাডি খেলার প্রচলন নেই।গ্রামবাংলার খেলাধূলার মধ্যে যেসব খেলা হারিয়ে গেছে তাদের মধ্যে হা-ডু-ডু, বা কাবাডি, খেলা অন্যতম। ঐতিহ্যবাহী হারিয়ে যাওয়া এসব খেলাধূলা এখন আর তেমন কোথাও চোখে পড়ে না। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত ও চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে.এম আজমিরুজ্জামানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা সম্পন্ন হয়েছে। ২৭শে মার্চ বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চুনারুঘাট ঐতিহ্যবাহী ডিসিপি হাই স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে উক্ত খেলা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় অংশগ্রহণ করে শক্তিশালী দল মিরাশী ইউনিয়ন বনাম চুনারুঘাট পৌরসভা। মিরাশী ইউনিয়ন ও চুনারুঘাট পৌরসভার মধ্যে অনুষ্ঠিত বাঘে সিংহের লড়াইয়ে। প্রতিযোগিতার ফাইনালে চুনারুঘাট পৌরসভা কাবাডি দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রানার আপ হয়েছে ১০নং মিরাশি কাবাডি দল। কাবাডি প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্যা টুর্ণামেন্ট হয় ওমরান । খেলা শেষে চুনারুঘাট থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এডভোকেট মোস্তাক বাহার এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে পুরষ্কার বিতরণ করেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা (বিপিএম সেবা)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নব নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর,ইউনও মঈন উদ্দিন ইকবাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আকবর হোসেন জিতু, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব তাহির মিয়া মহালদার,ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফুর রহমান মহালদার,পৌর মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু,প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি মোঃ জামাল হোসেন লিটন, মিরাশী ইউপি চেয়ারম্যান মো: রমিজ উদ্দিন। জেলা যুবলীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জিল্লুর কাদির লস্কর রিমন, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক লুবন, রেফারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ডিসিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জনাব সাইফুর রহমান ও চুনারুঘাট পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হান্নান। ফাইনাল খেলায় সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন চুনারুঘাট থানার ওসি তদন্ত আলী আশরাফ, দ এস.আই শেখ আলী আজহার, এস.আই মো: আল আমিন, এস.আই মহিন উদ্দিন, এস.আই জাহাঙ্গীর কবির পিএসআই রতন, প্রমুখ। উক্ত ফাইনাল খেলায় মিরাশী ইউনিয়ন দলের টিম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিরাশী ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান সোহাগ, এবং ডাঃ সিরাজুল ইসলাম ও চুনারুঘাট পৌরসভা দলের টিম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হান্নান। উক্ত খেলায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ চুনারুঘাট উপজেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে উক্ত কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা উপভোগ করবেন। উক্ত ফাইনাল খেলা শেষে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এক পুরস্কার বিতরণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের অধিনায়কের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা (বিপিএম সেবা) ও অতিথি বৃন্দ । উক্ত কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় হাজারো নারী পুরুষ দর্শকবৃন্দকে উপস্থিত থেকে খেলা উপভোগ করেন।
Leave a Reply