নিজস্ব প্রতিনিধি:এবার বাসের হেলপারের ধাক্কায় বাস থেকে পড়ে চাকার নিচে প্রাণ হারালেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ঘোরী মো. ওয়াসিম। গতকাল শনিবার বিকেল ৫ টায় মৌলভীবাজারের শেরপুর বিশ্বরোডে এ ঘটনা ঘটে। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্র গ্রামের ঘোরী মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, ওয়াসিমসহ ১১ জন শিক্ষার্থী নবীগঞ্জের দেবপাড়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তারা ময়মনসিংহ-সিলেট রোডের উদার পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। ভাড়া নিয়ে বাসের হেলপারের সঙ্গে তাদের বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে বাসের হেলপার ওয়াসিমসহ আরেকজনকে ধাক্কা দেন। এতে ওয়াসিম বাস থেকে পড়ে যান এবং চাকা তার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা রাকিব হোসেন নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বাস থেকে লাফ দিয়ে নামেন। ওয়াসিমকে দ্রুত প্রাইভেটকারে করে সিলেট ওসমানী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। রাকিব হোসেনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বাসটি আটক করেন। ততক্ষণে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশ বাসটি জব্দ করে। বাসের হেলপার ও চালকের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সহসাধিক শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ, শহরে যানবাহন প্রবেশ বন্ধ। এদিকে সিকৃবির সহসাধিক শিক্ষার্থী হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে সিলেট মহাসড়ক থেকে শহরে যানবাহন প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বাসের হেলপার ও চালকের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করছেন। প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত পদক্ষেপ না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। নিহতের পরিবারের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। শিক্ষার্থীরা সিলেটের কদমতলী বাসস্ট্যান্ডে উদার পরিবহনের কাউন্টারে হামলা করেছে। এছাড়া সিলেট ওসমানী হাসপাতালেও ভিড় করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালে তাৎক্ষণিকভাবে গেছেন সিকৃবির উপাচার্য প্রফেসর মতিয়ার রহমান হাওলাদার। উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান, মানুষের জীবনের মূল্য কমে গেছে। সহনশীলতা কমে গেছে। ওয়াসিমের মৃত্যুর এই ঘটনাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলা যায় না, এটা হত্যা।
এদিকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সিলেটের দক্ষিন সুরমা থানা পুলিশ বাস চালক জুয়েল মিয়াকে আটক করেছে। সে মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাড়াউড়া গ্রামের আজিদ মিয়ার ছেলে।
অপর দিকে রাতেই ওয়াসিমের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ রবিবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
Leave a Reply