ডেস্ক রিপোর্ট: পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের ১২ উপজেলায় ভোট শুরু হয়েছে আজ সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টায়। একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোটগ্রহণ।
এ নির্বাচনে উত্তাপ না থাকলেও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে সিলেট মহানগর পুলিশের ২টি ও জেলা পুলিশের অধীনে ১০টি উপজেলায় র্যাব-বিজিবি ছাড়াও পুলিশ ও আনসারের প্রায় ১৪ সহস্র ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা ছাড়া বাকি ১২ উপজেলায় আজ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপজেলাগুলো হচ্ছে- সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ ও বিশ্বনাথ।
১২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৭৬ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে সাতটিতে ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ১৬ জন।
পাঁচটিতে রয়েছেন নৌকার একক প্রার্থী ছাড়াও জাতীয় পার্টির চারজন, বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী ছয়জন এবং ইসলামী ঐক্যজোটসহ (ওআইজে) ও অন্য স্বতন্ত্র ১৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলার ১২ উপজেলায় চার পৌরসভা ও ৯৭টি ইউনিয়ন মিলে মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১০ লাখ আট হাজার ৯০ জন এবং মহিলা আট লাখ ৮৫ হাজার ৭১০ জন।
এসব উপজেলায় ৮১৬টি কেন্দ্রের চার হাজার ৪১৪ টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন ১৪ হাজার ৫৮ জন কর্মকর্তা। এরমধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার ৮১৬, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার চার হাজার ৪১৪ এবং আট হাজার ৮২৮ জন পুলিং অফিসার।
কেন্দ্রগুলোকে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) দুই ভাগে বিভক্ত করে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাঠ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রতি উপজেলায় একজন করে বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটানিং কর্মকর্তা সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সন্দ্বীপ সিংহ।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মাহবুবুল আলম বলেন, জেলার পুলিশের অধীনে ১০ টি উপজেলায় চার স্তরের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন ২ হাজার ২০০ পুলিশ ও ৭ হাজার ৭৫৪ জন আনসার, ৪২৭ জন বিজিবি ও র্যাবের ১৩০ সদস্য।
তিনি বলেন, ১০ উপজেলার ৬৪৭ কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫২টি গুরুত্বপূর্ণ, ১৯৬টি সাধারণ কেন্দ্র নির্ধারণ করে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ৩ জন ও সাধারণ কেন্দ্রে ২ জন করে পুলিশের পাশাপাশি একডজন করে আনসার সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। এরমধ্যে প্রতি ইউনিয়নে একটা করে মোবাইল পার্টি, প্রতি থানায় একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি করে ট্রাইকিং পার্টি ছাড়াও জেলা সদরে পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে ২টি করে চারটি স্ট্রাইকিং ও মোবাইল পার্টি থাকবে।
মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. জেদান আল মুসা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এসএমপির ২ উপজেলায় দেড় হাজার পুলিশ ও ২ সহস্রাধিক আনসার সদস্য নির্বাচনী মাঠে মোতায়েন করা হয়েছে। এরমধ্যে নির্বাচনী মাঠে ২১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ৪৪টি মোবাইল টিম থাকবে।
তিনি বলেন, দুই উপজেলার ১৬৯ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১২৫টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সদর উপজেলার ৯১ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৬৩ ভোট কেন্দ্র এবং দক্ষিণ সুরমায় ৭৮ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬২ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে। সে বিবেচনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। এছাড়া র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। দুই উপজেলায় ২ জন করে বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
Leave a Reply