হবিগঞ্জ সংবাদদাতা:হবিগঞ্জ শহরের চাঞ্চল্যকর তরুণলীগ নেতা সৈয়দ রুহুল ইসলাম পাভেল হত্যা মামলায় আসামীদের ফাসির আদেশের ৫ বছর পর হাইকোর্ট তা বহাল রেখেছেন। নিহতের স্ত্রী বাদিনী ও তার মা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবী জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিন বেঞ্চ এ রায় বহাল রাখেন। আসামী পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবি মোঃ বাছির আহমেদ মজুমদার ও শাহজাহান খান। বাদীপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। মামলার ফাসির আসামীরা হলো, পাভেল আহমদ ও আব্দুর রউফ মোল্লা। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামীরা হলো, সৈয়দ গোলাম জিলানী ও শাহীন মিয়া। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর বিকেলে সৈয়দ পাভেলকে তার বন্ধু ও মামলার প্রধান আসামি পাভেল আহমদসহ আরো কয়েকজন তাকে বাসা থেকে ডেকে শহরের পুরান হাসপাতাল সড়ক এলাকার রাজ ফ্যাশনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সৈয়দ পাভেল নিখোঁজ । ২৫ নভেম্বর বিকাল তিনটায় রাজ ফ্যাশন বিল্ডিং ও ডাঃ তপন কুমার দাশ গুপ্তের বাউন্ডারীর সরুস্থানে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ আটানো বস্তাবন্দি পাভেলের লাশ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে নিহত পাভেলের স্ত্রী নাজরাতুন নাঈম মৌসুমী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর থানায় পাভেল আহমেদ, সৈয়দ গোলাম জিলানী ও আব্দুর রউফ মোল্লা ও শাহীন মিয়াসহ আরও ৪/৫ জনকে আাসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের কে গ্রেফতার করে এবং তাদের তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নিহত পাভেলের ঘড়ি, ব্যাসলেট উদ্ধার করে পুলিশ। আসামি রউফ মোল্লা ও পাভেল আহমেদ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে মামলাটি হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। অবশেষে গত ২০১৪ সালের ৪ মার্চ সিলেটের কারাগারে থাকা পাভেল ও রউফ মোল্লাকে মৃত্যুদন্ড এবং গোলাম জিলানী হায়দার ও শাহীনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে আসামী পক্ষ হাইকোর্টে নির্দোষ চেয়ে একটি আপিল করেন। দীর্ঘ ৫ বছর শুনানী শেষে পূর্বের রায় আদালত বহাল রাখেন। এদিকে, বাদী মৌসুমী আক্তার ও নিহত পাভেলের মা সৈয়দ আনোয়ারা বেগম উক্ত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, পাভেলের ৪র্থ শ্রেণির সৈয়দ নিহাদুল ইসলাম নামের একটি সন্তান রয়েছে। সে এখনও কেদে কেদে তার বাবার কথা বলে। তারা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ করেন।
Leave a Reply