নিজস্ব প্রতিনিধঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাতারিয়া গ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ইউপি মেম্বার ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ ৬ আসামীর যাবজ্জীবন এবং ৪ আসামীর প্রত্যেকের ১০ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীর প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয় এবং ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গত রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এএনএম বশির উল্লাহ ও বিচারপতি মোস্তাফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন ব্যাঞ্চ উক্ত ১০ আসামীকে দন্ডাদেশ প্রদান করেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো, বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাতারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত সুরুজ আলীর পুত্র জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কোহিনুর আলম, মৃত হাসান আলীর পুত্র সাবেক মেম্বার বিএনপি নেতা তারা মিয়া, কাজল মিয়া ও সিরাজ মিয়া, মুঞ্জব আলীর পুত্র সমছু মিয়া ও আলাই মিয়ার পুত্র সুজন মিয়া। ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো, মৃত হাছন আলীর পুত্র চান মিয়া, মহিব উল্লার পুত্র ইদু মিয়া, মৃত সুরুজ আলীর পুত্র জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর আলম ও আলাই মিয়ার পুত্র নজির মিয়া। আসামীদেরকে রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ ২০১১ইং তারিখে বিকাল ৫টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উল্লেখিত সাজাপ্রাপ্ত আসামীগণসহ অপরাপর আসামীরা সাজেল মেম্বারের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে সিপাই মিয়া ও মর্তুজ আলীসহ লোকজন তাকে রক্ষা করতে যান। এ সময় আসামীরা তাদের উপরও হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই সিপাই মিয়া প্রতিপক্ষের টেটার আঘাতে খুন হন। এছাড়া গুরুতর আহত মর্তুজ আলীসহ অন্যান্য আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এখানে মর্তুজ আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে টেটাবিদ্ধ অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মর্তুজ আলী মারা যান। এ ব্যাপারে নিহত সিপাই মিয়ার পুত্র তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ উল্লেখিত আসামীগণসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। ওই আদালত থেকে সকল আসামীকে খালাস প্রদান করা হয়। রায়ের পর বাদীপক্ষ হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে আপিল মামলা দায়ের করে। হাইকোর্ট গত রবিবার মামলার নথিপত্র ও রায় পর্যালোচনা করে উল্লেখিত ১০ আসামীকে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করেন এবং অন্যান্য আসামীদের খালাস প্রদান করেন।
Leave a Reply