মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
জিজ্ঞাসাবাদের পর কারাগারে ব্যারিস্টার সুমন কারাগারে চুনারুঘাটে নিহত রাজু মিয়ার বাড়ি পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার চুনারুঘাট থানায় ব্যারিস্টার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ ॥ নিরাপত্তা জোরদার চুনারুঘাট ও মাধবপুরে ৩ মাদক ব্যবসায়ী আটক মাধবপুরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে নারীসহ আটক ৫ নবীগঞ্জে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল চুনারুঘাটে সাবেক এমপির গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী আহত ॥ অতঃপর ফাঁকাগুলি মাধবপুরে ভারতীয় শাড়িসহ ৩ কোটি টাকার চোরাই পন্য জব্দ লাখাইয়ে বিনামূল্যে বিতরণকৃত ধান-বীজ দোকানে রাখার দায়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা চুনারুঘাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় সামাদ গ্রেপ্তার

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ॥ বাহুবলে উপজেলা প্রকৌশলী অবরুদ্ধ ॥ মুচলেকায় মুক্তি

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯
  • ৪১৭ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী হরিপদ দাসকে মারপিট ও অশ্লীল গালিগালাজের কারনে বিতর্কিত উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রায় ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন উত্তেজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে মুচলেখায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান তিনি। গতকাল বুধবার বেলা ১২ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উল্লিখিত সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী হরিপদ দাস দাপ্তরিক কাজে উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কার্যালয়ে যান। এক পর্যায়ে হরিপদ দাসকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করেন গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী। হরিপদ দাস বিষয়টি অন্যান্য স্টাফদের জানালে উপস্থিত স্টাফগন উত্তেজিত হয়ে গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন। পরে সকল স্টাফগন মিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জসীম উদ্দিনের কাছে বিচার প্রার্থী হন। পরিস্থিতি সামলাতে নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশ ডেকে গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তার কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এ সময় উপজেলা সার্ভেয়ার ওয়াহিদুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ হোসেন শাহ, স্টাফ জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশল অফিসের হিসাব রক্ষক মীর মাহবুবুল হক, শরীফুল হক, আব্দুল মান্নান খান, এম.এল.এস.এস জাহাঙ্গীর আলম, এস.এম সানোয়ার হোসেনসহ ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখিত জবানবন্দি দেন।

লিখিত জবানবন্দিতে নিজ অফিসের স্টাফদের সাথে বেআইনী ও অমার্জিত আচরণ, শারীরিক লাঞ্চনা, লঘু ত্র“টিতে বেতন কর্তন, নিয়মিত অফিসে না আসা, জরুরী কাজে ফোনে না পাওয়া, সবসময় নেশাগ্রস্থ থাকা, নামাজি স্টাফদের নামাজ আদায়ে বাধাসহ নানা বিষয় উলে¬খ করা হয়। পরে প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হলে বাহুবল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই-এর উপস্থিতিতে পুলিশি হেফাজত থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার সময় প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দলবদ্ধ ভাবে উত্তেজিত অবস্থায় আমার কার্যালয়ে আসেন এবং তাৎক্ষনিক বিচার দাবী করেন। আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সহযোগীতা নেই এবং প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে উত্তেজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাত থেকে রক্ষা করে পুলিশি হেফাজতে আমার কার্যালয়ে নিয়ে আসি। এ সময়  প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তিতে আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছি’।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্টাফ জানান, টাকা না দিলে কোন ফাইলেই স্বাক্ষর করেন না প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী। টাকা দিলেই তিনি মাতালের মত স্বাক্ষর করতে থাকেন। তারা বলেন, তিনি রাত ২/৩ টায় উপজেলা পরিষদে গাড়ী নিয়ে ডুকেন। তখন তার চোঁখ দুটি লাল হয়ে থাকে, দেখলে ভয় করে।

শুধু তাই নয়, প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে হবিগঞ্জ জেলার ঠিকাদারদের নানা অভিযোগ। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে স্থানীয় সংবাদপত্রে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন হবিগঞ্জ এল.জি.ই.ডি’র ঠিকাদাররা।

সম্প্রতি এ নিয়ে ঠিকাদাররা একটি প্রতিবাদ সভাও করেন। প্রতিবাদ সভায় প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অনতিবিলম্বে বাহুবল থেকে প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়। এছাড়াও গত ২৭ ফেব্র“য়ারী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকৌশলীর অপসারণের দাবীতে কর্মবিরতী পালন করেন।

এ ব্যাপারে জেলা ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক অভিযোগ করে বলেন, ‘বাহুবলে যোগদানের পর থেকেই ঠিকাদারদের কাছে মোটা অংকের ঘুষ দাবী করে আসছেন প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তার দাবী পূরণ না হলে ঠিকাদারদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করেন তিনি’।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি। সরকারী দায়িত্বশীল হয়ে তিনি ইয়াবা ও মদ সেবন করে দিনের বেলা অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন এবং রাতের বেলা মাতাল অবস্থায় প্রকল্প পরিদর্শন করেন। জরুরী প্রয়োজনে দিনের বেলা তাকে কখনোই সাক্ষাতে কিংবা মোবাইলে পাওয়া যায় না। তার আচার-ব্যবহারও অরুচিশীল’।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com