শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

বিমান ছিনতাইকারী যুবকের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে, নায়িকা শিমলার সাথে ছিল রহস্যময় সম্পর্ক

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ৪১৬ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্টঃ বিমান ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত নিহতের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে তার নাম পলাশ আহমেদ । তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় দুধঘাটা। বাবার নাম পিয়ার জাহান।

রোববার চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইয়ের নাটকীয় ঘটনার পর প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় থেকে সোমবার সকালে হাজির হয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা । সকল তথ্য সংগ্রহ করতে এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার অনেকেই।

প্রাপ্ত তথ্য মতে এলাকার সোনারগাঁ উপজেলার দুধঘাটার অনেকের ভাষ্য জানা যায়, বাবার একমাত্র ছেলে পলাশ আহমেদ স্থানীয় তাহিরপুর মাদরাসা থেকে ২০১১ সালে দাখিল পাশ করার পর মাদরাসার নিয়ম নীতি রহস্যজনক কারণে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে শর্ট ফিল্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে । এ থেকেই অনেক শর্ট ফিল্ম করলেও সাফল্যের মুখ দেখেননি পলাশ । প্রকৃত নাম পলাশ হলেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে এলাকায় নায়ক নায়িকাদের নিয়ে বাড়ি আসতেন । এতে পরিবারে লোকজন পলাশ আহমেদের উপর প্রচণ্ডভাবে রাগান্বিত ছিলো । গত শনিবার রাতে পলাশ নিজের মোবাইল ফেলে বাড়ির সিমকার্ড ও মোবাইল নিয়ে দুবাই চলে যাচ্ছে বলে বেড়িয়ে যান ।

সকালে পুলিশ প্রশাসনের অনেকেই বিমান ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত নিহত পলাশের বাড়ি উপস্থিত হলে টনক নড়ে দুধঘাটা এলাকার সকলেই ।

এলাকার রহিম মুন্সী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এই পলাশই বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন নামে পরিচয় দিতো । বাবা পিয়ার জাহান মুদি দোকানদার হলেও পলাশ নায়ক নায়িকাদের নিয়ে এলাকায় শো ডাউন করতো । তার চাল চলন ছিল রহস্যেঘেরা । নায়িকা শিমলার জন্য পরাশ ছিল পাগল । বাড়িতেও নায়িকা শিমলাকে বিয়ে করতে বাড়িতে বলা হলেও কেউ রাজি ছিল না । নায়িকা শিমলা প্রায়ই সোনারগাঁয়ের দুধঘাটায় পরাশের বাড়িতে আসতো ।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় পলাশ আহমেদের বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেয়া উচিৎ হবে না । ঢাকা থেকেই ব্রিফিং করা হবে।

বিমান ছিনতাইকারীর হাতে ছিল খেলনা পিস্তল

খেলনা পিস্তল হাতেই বিমান ছিনতাইয়ের নাটক করেছিল ছিনতাইকারী, রোববার রাতে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। তাকে হত্যার মাধ্যমে ছিনতাই ঘটনার অবসান ঘটে।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই ঘণ্টার ছিনতাই ঘটনার অবসানের পর রোববার রাতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ফেইক, খেলনা পিস্তল।”
পরে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীও রাতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, ওই পিস্তলটি ছিল খেলনা।

চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমানের ফ্লাইটটি বিকালে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পর মাঝ আকাশে অস্ত্রধারী ওই যুবক যাত্রীদের ভয় দেখানোর পাশাপাশি ক্রুদের পণবন্দি করেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, রাত সোয়া সাতটার দিকে সেনা কম্যান্ডোদের অভিযানে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে সে মারা যায়।
চট্রগ্রামে সেনানিবাসের জিওসি মে. জে. মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ঔ ব্যক্তিকে নিবৃত করার চেষ্টা করা হয়। ঐ ব্যক্তি আত্মসমর্পনে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।

জে. রহমান জানান, লে. কর্নেল ইমরুলের নেতৃত্বে একটি সেনা কম্যান্ডো দল মাত্র আট মিনিটে অভিযান শেষ করে। তিনি জানান, এই কম্যান্ডো দলটিই ঢাকায় হলি আর্টিজান সন্ত্রাসী হামলার মোকাবেলায় অভিযান পরিচালনা করেছিল।

জে. রহমান জানান, নিহত যাত্রীটি বলেছিল, তার নাম মাহাদি। সে প্রধানমন্ত্রীএবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল।

সকল যাত্রী ও ক্রু সুস্থ রয়েছেন বলে কর্মকর্তারা বলছেন।

চট্টগামে বিমানটি অবতরণের পর প্রায় দেড় শ’ যাত্রীর সবাই এবং পাইলট ও ক্রুরা সবাই নেমে আসার পর একমাত্র ছিনতাইকারীকে ধরতে শুরু হয় সামরিক বাহিনীর কমান্ডোদের অভিযান। তাতে নিহত হন ওই যুবক।

এই ঘটনার পর একটি সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ”কথিত ছিনতাইকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তার কাছে একটি অস্ত্র ছিল এবং বুকে বোমা বাঁধা থাকতে পারে। সেরকম তার বাধা রয়েছে।”

”তিনি পাইলটের মাথায় অস্ত্র ধরে দাবি করেছিলেন যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।”

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com