হবিগঞ্জ সংবাদদাতাঃ হবিগঞ্জে ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল, হামলা ও মারপিটের অভিযোগে আওয়ামীলীগের দায়েরকৃত ৪টি মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছসহ বিএনপির বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেনের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এর আগে এই ৪টি মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন বিএনপির এই নেতাকর্মীরা। গতকাল হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীরা হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হন। জি কে গউছ হবিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন হবিগঞ্জ শহরের জে কে এন্ড এইচকে হাইস্কুল ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগে ২২ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় গত ১ জানুয়ারী একটি মামলা করা হয়। মোহনপুর এলাকার মৃত রইছ উল্লার পুত্র ও আওয়ামীলীগ কর্মী আশরাফ আহমেদ হারুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়াও এই মামলায় আসামী করা হয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আরও ৩০ নেতাকর্মীকে। একই দিন শহরের যশেরআব্দা এলাকায় সওদাগর কৃষ্ণধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচনী কাজে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বাঁধা প্রদান ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মৃত মঞ্জব আলীর পুত্র জুনাব আলী বাদী হয়ে সদর থানায় গত ২ জানুয়ারী আরও একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়। এই মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।
শহরতলীর তেতৈয়া ভোট কেন্দ্রে গাড়ি ভাংচুর ও মারপিটসহ বিভিন্ন অভিযোগে তেতৈয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র সাবেক মেম্বার তৈয়ব আলী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়। এই মামলায় ১০৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩শ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।
শহরের স্টাফ কোয়াটার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগে আওয়ামীলীগ কর্মী আব্দুর রহিম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়াও এই মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আরও শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।
গত ২০ জানুয়ারী এই ৪টি মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন জি কে গউছসহ অন্যান্য আসামীরা। এই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গতকাল সোমবার হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন না-মঞ্জুর করে আলহাজ্ব জি কে গউছ, তার ছোট ভাই জি কে গাফফার, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি কোহিনুর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র সহ সভাপতি জহিরুল হক শরীফ, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজিব আহমেদ রিংগন, ইউপি মেম্বার বিএনপি নেতা ছামিউল বাছিত, জেলা ছাত্রদল নেতা গোলাম মাহবুব, যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাবুল, এনামুল হক এনামসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করেন। অন্য আসামীদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে জিকে গউছের জামিন নামঞ্জুর করার কারনে আদালত প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল করে দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে জি কে গউছসহ বিএনপির বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সাখাওয়াত হাসান জীবন, সাবেক এমপি শাম্মি আক্তার। গতকাল সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতি নেতৃবৃন্দ এ নিন্দা জানিয়েছে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবী করেন।
Leave a Reply