শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত নবীগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের গেট স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ে ৩০ জন আহত নবীগঞ্জ উপজেলায় মোটরসাইকেল চাপায় শিবলী হাসান (১৭) নামে এক নবম শ্রেণীর ছাত্র নিহত হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ তিনজন নিহত ক্ষতিগ্রস্থ ১২ পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী। বাস চাপায় সিরাজুল ইসলাম (৭০) এক বৃদ্ধ নিহত স্ত্রীকে নিয়ে পবিত্র হজ্জে যাওয়া হল না ব্যবসায়ী আব্দুল হালিমের। চুনারুঘাটে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক ২ রাস্তা নিয়ে দুই ভাইয়ের সংঘর্ষে টেটাবিদ্ধ মইনুল ইসলাম চুনারুঘাট উপজেলা ও বানিয়াচং উপজেলায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু

চুনারুঘাটে বিষাক্ত শিল্পবর্জ্যের থাবা: দুর্গন্ধে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩
  • ২২ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর এলাকায় প্রায় ৭ বছর আগে বিশাল পাহাড়ি জমি ক্রয় করে শিল্প কারখানা স্থাপন করা হয়। সাইনবোর্ড বিহীন এ কারখানার নাম স্থানীয়দের কাছে অজানা। এখানে মুরগী থেকে ডিম উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি মুরগীর বিষ্ঠা থেকে উপৎপাদন হচ্ছে সার। কারখানার সৃষ্ট বর্জ্য ও নিষ্কাশিত দূষিত পানিতে বিনষ্ট হচ্ছে এলাকার খাল-বিল, নদী-নালার পানি, মাছ ও কৃষি জমি। উত্কট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী। মুরগির বর্জ্য ও বিষাক্ত পানির দ্বারা আশেপাশের গ্রামের পরিবেশ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ওই কারখানার ভেতর থেকে কালো পানি প্রথমে ধলাজাই খালে প্রবেশ করে। পরে ভূইছড়া হয়ে খোয়াই নদীতে কালো পানি প্রবেশ করছে। এমনকি কৃষকদের ধান্য জমিতেও এ পানি প্রবেশ করছে।
এ সময় আলাপকালে ধলাজাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন, আব্দুল হামিদ, রহিমা খাতুন, জায়েদা খাতুনরা বলেন- কারখানা করার পূর্বে ওই পাহাড়ি জমিতে নানা ধরণের ফসল চাষ হত। এখন ডিম ও সার উৎপাদন হচ্ছে। এসব কিভাবে উৎপাদন করছে, তা আমাদের অজানা। তবে কারখানার ভেতর থেকে কালো পানি বেরুচ্ছে। এ পানি ধলাজাই খাল, বিল থেকে আমাদের জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও ভূইছড়া হয়ে খোয়াই নদীতে প্রবেশ করছে বিষাক্ত পানি। কোম্পানির বিষাক্ত পানিতে প্রচুর পরিমাণে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য তৈরি করে। কৃষকরা এসব বর্জ্যের পানি থাকায় কৃষি জমিতে কাজ করতে পারছেননা। তারা বলেন, আমরা কৃষির উপর নির্ভর। কৃষি কাজে খালের পানি ব্যবহার করা হত। বর্তমানে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারখানার কালো পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে স্থানীয়রা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারখানার মালিক পক্ষ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও একশ্রেণির লোক ম্যানেজ করে রেকেছে। এ কারণে এলাকার নিরীহ লোকেরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। তারা বলেন, প্রায় ৭ বছর পূর্বে জমি ক্রয় করে কারখানা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষে প্রায় দুই বছর ধরে কারখানায় উৎপাদন চলছে। যত দিন যাচ্ছে কারখানা থেকে কালো পানি অধিকহারে বেরুচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে দুর্গন্ধ। শুধু তাই নয়, মশা ও মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা নাভিশ্বাস নিয়ে বসবাস করছেন। খাল থেকে কালো পানি জমিতে প্রবেশ করায় কাজ করতে গিয়ে কৃষকরা বিরাট সমস্যার মুখে পড়েছেন।
স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বলেন, কালো পানির দুর্গন্ধের পাশাপাশি এর বাতাস লাগলেই শরীরে চুলকানি শুরু হয়। তাই স্কুলে যেতে মন চায় না। স্থানীয়রা দ্রুত এর প্রতিকার চেয়েছেন। কারখানার ম্যানেজার চঞ্চলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে মুরগী থেকে ডিম ও মুরগীর বিষ্ঠা থেকে জৈব সার উৎপাদন হয়। কালো পানির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। সর্বশেষ তিনি বলেন, মিডিয়ার কাছে বক্তব্য দিতে হলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক আখতারুজ্জামান টুকুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমরা মুঠোফোন বা সারাসরি বক্তব্য দেইনা। অভিযোগ করা হলে খতিয়ে দেখা হবে। জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন- অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, লোকজনের বসবাসের আশপাশে কলকারখানা হয়না। নিয়মানুযায়ী বিষাক্ত বর্জ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাইরে নির্গত করতে হয়। কিন্তু অনেক শিল্প কারখানা সেই নিয়ম অনুসরণ না করে বর্জ্য ও বিষাক্ত কেমিক্যাল সরাসরি জলাভূমিতে ছেড়ে দিচ্ছে। এ নিয়ে প্রশাসনের জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com