নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের দক্ষিঞ্চালের ফদ্রখলা গ্রামের মাঝের কের্টআন্দর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কাররের অভাবে চলাচলে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের। সংশ্লষ্টি কর্তৃপক্ষ রহস্য জনক নীরব। যেন দেখার কেউ নেই । স্থানীরা বলছেন রাস্তাটি প্রায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে খানাখন্দে ভরপুর এবং সামান্য বৃষ্টিপাতে বড় বড় গর্তে পানি জমে কাঁদায় একাকার কর্দমাক্ত! । ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে আহত হচ্ছেন যাতায়াতকারীরা। তাই গুরত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কারো সুনজর নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আলাপকালে স্থানীয়রা জানান, সামান্য এই রাস্তাটির জন্য উপজেলার শেষ প্রান্তের মানুষগুলোর শহরে আসতে হয় দীর্ঘ রাস্তা ঘুরে। কিছু অংশ পিচঢালা রাস্তা থাকলেও খানাখন্দে ভরপুর, আর মাঝের এই দুই কিলোমিটার চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বাহুবল এলজিইডি দফতরে একাধিকবার চেষ্টা করেও রাস্তা সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। ফলে পার্শ্ববর্তী কমপক্ষে ১০টি গ্রামের মানুষকে কষ্ট করেই চলাচল করতে হচ্ছে। এর আগে গেল কয়েক বছর ধরে স্থানীয় সাংবাদিকরা রাস্তার দুর্ভোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলেও রাস্তা সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃক্ষের । সরেজমিনগিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা সিলেট মহাসড়কের লস্করপুর রেল দিয়ে ঘেষে যাওয়া কোর্টআন্দর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহীদ রাস্তাটি দিয়ে বাজার হাট থেকে ফিরতে হয় ১০ গ্রামের মানুষ। লস্কর পুর রেলক্রসিং হতে কোটাআন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রয়েছে ভাঙ্গাচোরা খানাখন্দে ভরপুর । সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই গর্ত পেরিয়ে ভ্যান-রিকশা সিএনজি কষ্ট করে চলছে। কিন্তু বড় কোনো যানবাহন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই সামান্য বৃষ্টিপাতে বড় বড় গর্তে পানি জমে কাঁদায় একাকার কর্দমাক্ত হয়ে যায় । ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ জানান, রাস্তাটি বেশ কয়েক বছর আগে সংস্কার হয়েছিল। সেই সময় পিচঢালা রাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু উভয় অংশে মাঝের দুই কিলোমিটার কেউ মেরামত করেনি। ফলে ওই দুই কিলোমিটার ভেঙ্গেচুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, ওই স্থানটি এতটাই ভেঙ্গেচুরে গেছে যে সেখানে তৈরি হওয়া গর্ত পেরিয়ে চলাচল সম্ভব নয়। ছোট ছোট যানবাহনগুলো টেনে উঠাতে হয়। আর বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এলাকার সিএনজি চালক বকুল মিয়া জানান, আমরা অবহেলিত উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত রাস্তাটি দেখার কেউ নেই । সড়কটির এমন অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সীমান্ত এলাকার কয়েক শতাধিক ব্যবসায়ী, কৃষক, শিক্ষার্থীসহ বাজারে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে এমন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এই রাস্তায় পথচারীরা। স্থানীয় শিক্ষার্থী হাবিবা, মাশকুরা, তানিয়া, লিপি, শারমিনজাহান সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন-তাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। যেটি বছরের পর বছর কাঁদা পানিতে ভরে থাকে ফলে তাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, জিতু মিয়া, সিতু মিয়াসহ অনেকে জানান, রাস্তার এমন পরিস্থিতিতে তাদের ব্যবসায় চরম ক্ষতি হচ্ছে। যানবাহন না চলায় তাদের বাড়তি ভারা গুনতে হচ্ছে।
এছাড়া শতাধিক কৃষক জানান ,তাদের এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্যও সহজে বাজারজাত করতে পারছেন না মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য। এ বিষয়ে তারা একাধিকবার বাহুবল এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু রাস্তাটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। ওই সড়কে চলাচলকারী সিএনজি চালক শহীদ জানান, দূরত্ব কম হওয়ায় কষ্ট করেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি, ভাঙ্গাচোরা স্থানে এসে অনেক সময় যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয়। এরপর সিএনজিটি টেনে তুলে ভাঙ্গা স্থান পার হতে হয়, এমনকী মাঝেমধ্যে সিএনজি উলটে গিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হন যাত্রীরা পরে জরিমানা গুনতে হয়। এ বিষয়ে এলজিইডি কতৃপক্ষ জানান, এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য তারা কয়েক দফা উচ্চপর্যায়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও বরাদ্দ পাননি। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত রাস্তা মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসসদ সদস্য দেওয়ান শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী বলেন, বাহুবলের রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে পর্যায়ক্রমে সে রাস্তাটিও করা হবে। মিরপুর ইউনিয়ন চেয়াম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকত জানান, আমার কাছে বরাদ্দ নেই, স্থানীয় এমপির সাথে কথা বলে বরাদ্দ আসলে রাস্তাটির সংস্কার করা হবে।
Leave a Reply