উম্মে ছালমা কালেঙ্গা থেকে ॥ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক পাহাড়ি বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা। সুন্দরবনের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক এই বন প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এ বনভূমি বনবিভাগের কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গঠিত। রয়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়-টিলা। এখানকার পাহাড়গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৭ মিটার, প্রতিদিন এই সড়কে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। পাহাড়ি বনাঞ্চলে যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা কালেঙ্গা সড়ক। পায়ে হেঁটে চলাচল সম্ভব নয়। যানবাহনে চলাচল করতে হয়। অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তায় তেতলে যায়। সড়কটিতে পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। জনদুর্ভোগ চরম আকার সধারণ করেছে। সরকটি সংস্কারের দাবীতে বারবার দাবী জানালেও সংশ্লিষ্টদের তেমন কোন উদ্যোগ নেই। এনিয়ে কয়েবার বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে এর কোন প্রতিকার বা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেহই। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন উপজেলার রানিগাঁও ইউনিয়নের কালেঙ্গা,লালকেয়ার,হরিনমারা,আবদুল্লাপুর,নারিন্দা ঠিলা, নতুন বাজার, চামলতলীসহ পুর্বঞ্চলের প্রায় দশ গ্রামের মানুষ। এই সড়কের পাশে রয়েছে দুইটি কওমী মাদ্রাসা, কালেঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,বিজিবি সীমান্ত ফাড়ি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বেহাল অবস্থা এ সড়কের। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমনকি ভাঙ্গা রাস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনও। কালেঙ্গা সড়কের প্রায় কিছু জায়গা সলিং হলেও ধীরগতিতে কাজ করায় আজও সমাপ্ত হয়নি কাজ । এলাকার জনসাধারণরা চরম ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি পাকাকরণের দাবি করে এলেও বছরের পর বছর ধরে এ দাবি উপেক্ষিত।
কাদামাটি মাড়িয়ে শত শত পথচারীকে উপজেলা সদরে আসতে হচ্ছে। পুরো সড়কটি স্থানে স্থানে গর্ত আর কাদাজলে একাকার সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গাড়ি তো দূরের কথা পায়ে হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে রাস্তাটি দিয়ে। এতে করে ময়লা আর কাদা পানি মাড়িয়ে চুনারুঘাটে সদরে আসতে হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। কয়কজন শিক্ষার্থী জানান, কালেঙ্গা সড়কে বড় বড় গর্ত ও বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। কাদা মাড়িয়ে আসতে গিয়ে অনেক সময় কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। অল্প বৃষ্টি ও বর্ষা মৌসুম এলেই এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা এ রকম দুর্ভোগের শিকার হন। এলাকার মানুষের হাট বাজার করা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া– এমনকি অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতেও চুনারুঘাট উপজেলা সদরই তাদের একমাত্র ভরসা। তাই প্রতিদিনই এই সড়ক দিয়ে এলাকাবাসীকে চুনারুঘাট সদরে আসতে হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রায় ৩ পুর্বে বিমান মন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্করের বিশেষ উদ্যোগে এ সড়কটিতে ইট ও বালু দিলে এলাকাবাসীর কিছুটা দুর্ভোগ লাঘব হয়। কিন্তু ৩মাসের ব্যবধানে আবারও সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, এ সড়কটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সম্প্রতি সড়কটি পাকাকরণের ব্যাপারে এলজিইডিতে একটি প্রস্তাব প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি পাকাকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। চুনারুঘাট উপজেলা প্রকৌশলী মিশু কুমার দত্ত বলেন, জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা পাকাকরণের জন্য একনেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখনও এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলেই টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে।
Leave a Reply