বানিয়াচং সংবাদদাতা॥ হবিগঞ্জ বানিয়াচং উপজেলা সদরে যত্রতত্র অনুমোদনবিহীন দোকানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ আশেপাশের লোকজন দুর্ঘটনার ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। এছাড়াও এলপি গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। বানিয়াচং সদর ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এমনকি সেলুন, মুদি দোকান, স্টুডিও, বইয়ের দোকান, প্লাস্টিক সামগ্রী, কসমেটিক্স, জুতার দোকান, ফার্নিচার ও ফোন-ফ্যাক্সের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে এই সিলিন্ডার গ্যাস। উপজেলার অধিকাংশ দোকানীর এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। অনেক দোকানে পুরাতন সিলিন্ডারে এলপি গ্যাস বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি দৃশ্যমান নয়। সদরের প্রায় সবকটি হাট-বাজারের অধিকাংশ দোকানে বিভিন্ন সাইজের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য তালিকাও টাঙ্গানো নেই। এসব মৌসুমি দোকানীদের এলপি গ্যাস ব্যবহারের নিয়ম কানুনও জানা নেই। সস্তায় নিম্নমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানী ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রির হিড়িক পড়েছে বানিয়াচংয়ে। উপজেলার কোথাও জাতীয় গ্যাস লাইনের সংযোগ না থাকায় বিশেষ করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও রেস্টুরেন্টে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে এবং দামও রাখা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম কানুন না জানায় কোথাও কোথাও দুর্ঘটনা ও অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটছে।এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ সামছুল ইসলাম জানান, এলপি গ্যাস ও পেট্টোলিয়ামের সঙ্গে অনেকগুলো সংস্থা জড়িত। এলপি গ্যাসের বাজার অভিভাবকহীন ছিল। এ ব্যাপারে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার বিক্রেতাদের সতর্ক করা হচ্ছে। এলপি গ্যাস বিক্রির জন্য সনদ ও তদারকির কাজ বিস্ফোরক অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ করে থাকেন। এলপি গ্যাস কারা বিক্রি করছে, তাদের বিক্রির অনুমোদন আছে কি না সেটাও বিস্ফোরক অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ দেখেন। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনেরও এ ব্যাপারে করণীয় অনেক কিছুই আছে। যারা বিক্রি করছে তাদের ফায়ার অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স লাইসেন্সের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সিলিন্ডারগুলোতে মেয়াদ উল্লেখের বিষয়টিও গুরুত্বেও সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন আছে বলে মনে করি।
এদিকে এলপি গ্যাস বিক্রেতারা জানান, তারা সরকারি অনুমোদন পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো অনুমোদন মেলেনি। তবে বর্তমানের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। সরকারি অনুমোদন পাওয়ার আগেই এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারসহ নানা সরঞ্জাম বিক্রি করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে যত্রতত্র এলপি গ্যাস বিক্রির ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। এতে করে অনুমোদিত বিক্রেতারা লোকসানের মুখে পড়ছেন, পাশাপাশি ক্রেতারাও প্রতারিত হচ্ছেন। বেশ কিছুদিন আগে উপজেলা শাসনের পক্ষ থেকে অনুমোদনহীন এলপি গ্যাস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও এ ধরনের অভিযান এখন নেই বললেই চলে। বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে বিষয়টি স্বীকার করে জানান, যে কেউ ইচ্ছে করলেই এই দাহ্য পদার্থ এলপি গ্যাস বিক্রি করতে পারেনা। বিক্রি করাটা সম্পুর্ণ বে-আইনী। তবে কেউ যদি কোনো ধরণের অভিযোগ প্রদান করে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলায় কতগুলো দোকানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও ব্যবহার হচ্ছে তারও তালিকা তৈরি করা হবে শীঘ্রই।
Leave a Reply