নুর উদ্দিন সুমন ॥ ফেসবুক আমাদের জীবনের বড় একটি সময় কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মানুষ গড়ে প্রায় ১ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় করছে প্রতিদিন ফেসবুক স্ট্যাটাস আপডেট, ছবি আপলোড, চ্যাটিং বা হোমপেজ ব্রাউজিং করতে। আর টিনএজরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও বেশি জড়িয়ে পড়ছে। নাওয়া-খাওয়া, ঘুমের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করা হচ্ছে ফেসবুক। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বাস-ট্রেনসহ রাস্তা পার হতে গিয়ে, এবার হাসপাতালেও ফেসবুকের নীল জগতের আসক্তি ছাড়তে পারছে না তরুণ তরুণীরা। সম্প্রতি (১২এপ্রিল শুক্রবার) বিকেল ৩টায় চুনারুঘাট হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালের বেডে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় জনৈক তরুণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মেসেঞ্জারে চেটিংএ মগ্ন। বর্তমান জরিপে জানা গেছে, বয়স্কদের তুলনায় তরুণ তরুণীদের এ নেশা বেশি। গবেষকরা বলছেন প্রতি দুইজন তরুণদের মধ্যে একজন এ নেশায় আক্রান্ত। অনেক ব্যবহারকারীরা শোবার আগে শেষ কাজ হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে আবার ঘুম থেকে উঠেই সবার আগে ফোন চেক করেন। শুধু তাই নয়, অনেকে রাতে কোন কারণে ঘুম থেকে উঠলেও ফোন ব্যবহার করে থাকেন। অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ণ মিটিং বা সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে বেশিরভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী কাজ বা আড্ডার পরিবর্তে স্মার্টফোনে সোশ্যাল সাইট বা ইমেইল চেক করে থাকেন অনেকে। অনেকে তো আবার রাস্তা পার হওয়ার সময় বা টয়লেটে গিয়েও কিছুতেই চোখ সরাতে পারেন না মোবাইলের স্ক্রিন থেকে। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি ঐ তরুণী জানান, হাসপাতালে আমি একা শুয়ে আছি নিজেকে ভিষণ একা লাগছিলো, তাই অবসর সময়ে আমি অসুস্থতার খবর বান্দবীদেরকে লিখছিলাম। ফেসবুক নেশা সম্পর্কে চুনারুঘাট হাসপাতালের আরএমও মোমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ফেসবুক আসক্তি এখন একটা নেশা। এটি ‘ডিজিটাল কোকেন’ অ্যাডিকশনের মতো হয়ে গেছে। আজকাল তরুণ প্রজন্ম একবার ফেসবুকের মধ্যে ঢুকলে আর বের হতে চায় না। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা থেকে শুরু করে ঘুম কম হওয়াসহ নানা অসুস্থতার জন্যও একে দায়ী করা হচ্ছে। কাজেই ফেসবুক ব্যবহারে প্রয়োজন সচেতনতা। আর শিশু কিংবা উঠতি বয়সীদের ফেসবুক ব্যবহারে প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সামাজিক বিপ্লব প্রয়োজন। ফেসবুককে ভালো কাজে ব্যবহার করতে হবে।’
Leave a Reply