যে কোনো সুস্থ মানুষের মাস্ক ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি দেশে করোনা আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সাধারণ মানুষ মাস্ক কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ফলে অস্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি ময়লাযুক্ত মাস্ক ফুটপাতসহ অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এসব মাস্ক ব্যবহার করলে হেপাটাইটিস-বি, টিবি, টাইফয়েড, আমাশয়সহ ২০ ধরনের সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এ প্রসঙ্গে জানান, সুস্থ মানুষের মাস্ক ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই। মাস্ক ব্যবহার করবে শুধু ডাক্তার-নার্সরা। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হাঁচি-কাশি দিলে জীবাণু নিচে পড়ে যায়। তবে হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্বে কেউ থাকলে তার আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আরো বলেন, মাস্ক ব্যবহার জরুরি নয়, এমনকি হ্যান্ড স্যানিটাইজার না হলেও চলবে। শুধু সাবান দিয়ে হাত ধুলে ভাইরাস মুক্ত হওয়া সম্ভব। তাই এত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে পরামর্শ দেন তিনি।
এরপরও ঘুরেফিরে উঠে আসছে একটিই প্রশ্ন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কতটা প্রতিরোধ করতে পারে ফেস মাস্ক! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ফেস মাস্ক পরলেই নিজেকে নিরাপদ ভাবার সুযোগ নেই। পাতলা সার্জিক্যাল মাস্ক সাধারণ দূষণ, ধুলাবালু আটকাতে বেশি ব্যবহূত হলেও তা পুরোপুরি নিরাপত্তা দেয় না। সাধারণ মাস্কের ফাঁকফোকর গলে ভাইরাস বা বাতাসবাহিত জীবাণু সহজেই প্রবেশ করতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাস্ক মুখে ঠিকমতো ফিটও হয় না। তাছাড়া বারবার মাস্ক ঠিক করার জন্য নাকে-মুখে হাতের স্পর্শ লাগার আশঙ্কা থেকে যায়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বাড়তে পারে।
এদিকে মাস্ক কেনার ধুম পড়ায় হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র মাস্কের সংকট। তবে অনেক হাসপাতাল নিজস্ব উদ্যোগে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, ডাক্তার-নার্সদের জন্য তিনি পর্যাপ্ত মাস্ক মজুত রেখেছেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, তার হাসপাতালে মাস্কের সংকট রয়েছে। মিটফোর্ট হাসপাতালেও রয়েছে মাস্কের সংকট।
Leave a Reply