শেখ মোঃ হারুনুর রশিদ।। চুনারুঘাটে কৃষকদের জন্য ৫০ ভাগ ভর্তুকীতে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এমনকি বরাদ্দকৃত মেশিন বিতরণের তথ্য নিয়ে দেখা দিয়েছে ঘাফলা।জানা যায়,চুনারুঘাট উপজেলার কৃষকদের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রায় শতাধিক মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়।এসব মেশিন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।এবং বছরের বিভিন্ন সময়ে কৃষকদের নানা রকমের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।তাঁদেরকে নাস্তা,খবারসহ সম্মানি দেওয়া হচ্ছে।এমনই একটি তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ মে কৃষি অফিসে গিয়ে এবং কৃষকদের বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের নাস্তা ও খাবারের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি অফিসার জালাল উদ্দিন সরকার ও তাঁর প্রধান সহকারী উৎপল কুমার দত্ত এবং এসএপিপিও নুরুল ইসলাম খাঁনের হিসাব অনুযায়ী প্রমাণ পাওয়া যায়।তবে কৃষকের নাস্তা ও খাবার থেকে প্রতি বছরে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪শত টাকার কোন হিসেব দিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।এর একটি প্রতিবেদন দৈনিক প্রতিদিনের বাণী পত্রিকায় প্রকাশিত হলে চুনারুঘাটের ওই দিনের পত্রিকার বান্ডেল ও গায়েব হয়ে যায়।ওই দিন খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের মেশিনগুলোর হিসাব চাইলে উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার(এসএপিপিও)নুরুল ইসলাম খাঁন বলেন এই হিসাবটা আমার কাছে আছে।সর্বশেষ আমরা ২৮টি মেশিন কৃষকদের দিয়েছি।পুরোপুরি হিসেবটা আপনি পরে আমার কাছ থেকে জেনে নিবেন।তাঁর এমন কথায় কৃষি অফিসার সম্মতি দিয়েছিলেন।গত ১৯ মে রবিবার পুরো তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এসএপিপিও’র অফিসে গেলে তিনি বলেন আপনাকে তো হিসাব দেওয়া যাবেনা।কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) ও সদস্য সচিব কৃষি অফিসারের অনুমতি ব্যতিত হিসাব দেওয়া যাবেনা।
আপনি এবং আপনার অফিসার গত১৪ ই মে,২৮ টি মেশিন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছেন এবং পুরোপুরি হিসাব পরে অফিস থেকে জেনে নেওয়ার কথা বলেছিলেন কেন?এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি অশুভ আচরণের মধ্য দিয়ে বলেন,আগে বলেছিলাম এখন দেওয়া যাবেনা।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈন উদ্দিন ইকবালের সাথে কথা বললে তিনি বলেন কৃষি অফিসার তো এখন অফিসে নেই আমি পরে কৃষি অফিসারকে তালিকা দেওয়ার কথা বলে দিব।গত ২১ মে ইউএনও’র কাছে গেলে তিনি বলেন আমি বলে দিয়েছি আপনি কৃষি অফিসারের কাছে যান তালিকা দিবে। তাৎক্ষণিক কৃষি অফিসারের কাছে গেলে তিনি বলেন আমরা উপজেলার কৃষকদের মাঝে সরকারের ৫০ ভাগ ভর্তুকীতে ছোট-বড় মিলিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭০টি মেশিন দিয়েছি।এর মধ্যে অর্থ বছরের শেষ দিকে অনুমোদন হয়েছে ৩৩টি দেওয়া হয়েছে ২৭টি।অনুমোদনকৃত বাকি ৫ টি কি করা হবে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।মেশিনের মডেল ও মূল্য জানতে চাইলে তিনি বলেন একটি বড় কম্বাই হারভেস্টার সরকারী ভর্তুকীতে কৃষক দেয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা,দুটি ছোট হারভেস্টার ১ লক্ষ ৪০ হাজার করে ২ লক্ষ ৮০ হাজার,রিপার মেশিন ২৪টি ৯ লক্ষ টাকা।বাকি ৪৩ টি মেশিনের কোন হিসাব দেননি তিনি।মেশিনগুলো কোথায় এবং কাকে দিয়েছেন?এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি পূণরায় বলেন,উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি ব্যতিত আমি বলতে ও তালিকা দেখাতে পারবনা।কৃষি অফিসারের এমন লুকোচুরিতে চুনারুঘাটের কৃষকদের উন্নয়ন কার্যক্রমের সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এছাড়া সরকারের ৫০ ভাগ ভর্তুকীর খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ৭০ টি মেশিনের প্রায় ২থেকে ৩টি মেশিনের হিসাব দিলেও অবশিষ্ট প্রায় ৫০ লাখ টাকার ও বেশি দামের ৬৬ থেকে ৬৭ টি মেশিনের কোন হিসাব দেননি কৃষি অফিসার জালাল উদ্দিন সরকার।
Leave a Reply